রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভায় এক্সিকিউটিভ অফিসারদের পুনর্নিয়োগে কড়া শর্ত আরোপ করল রাজ্য সরকার। এখন থেকে নিজেদের ইচ্ছামতো এক্সিকিউটিভ অফিসারদের চাকরির মেয়াদ বাড়াতে পারবেন না পুরবোর্ডের কর্তারা। রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর থেকে আগাম অনুমোদন নিতে হবে। কোনও পুর-এক্সিকিউটিভ অফিসারকে পুনরায় নিয়োগের আগে অতীতে তিনি ঠিকমতো তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে।
সব দিক খতিয়ে দেখেই পুনর্নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব খলিল আহেমদ জানান, অনেক ক্ষেত্রে কোনও কারণ ছাড়াই পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসাররা অবসর নেওয়ার পর তাঁদের চাকরিতে পুনর্নিয়োগ করা হচ্ছে। পুরবোর্ড সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর সেটা জানতে পারছে পুরদপ্তর।
পুরসভাগুলিতে এ রকম অনেক এক্সিকিউটিভ অফিসার রয়েছেন, যাঁরা কাজ না করেই বসে বসে বেতন পাচ্ছেন এবং অন্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। এর ফলে সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছে। এ বার পুরো বিষয়টিকে নিয়মের মধ্যে আনা হচ্ছে। দরকার ছাড়া কাউকে আর পুনর্নিয়োগ করা হবে না।
রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, রাজ্যে যত ছোট ছোট মিউনিসিপ্যালিটি আছে, তার প্রধান আধিকারিক এক্সিকিউটিভ অফিসাররাই। বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল অ্যাক্টে তাঁদের প্রভূত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
পুরপ্রধানের সঙ্গে পরামর্শ করে তাঁরাই পুরসভা পরিচালনা করেন। অফিসারদের দায়িত্ব বণ্টন করা থেকে শুরু করে পুরসভার যে কোনও কর্মসূচি রূপায়ণেও তাঁরাই মুখ্য ভূমিকা নিয়ে থাকেন। ফিনান্স অফিসারের সঙ্গে আলোচনা করে পুরবাজেটও প্রস্তুত করেন।
বোর্ড মিটিংয়েও তাঁদের হাজিরা থাকে। মূলত ডব্লিউবিসিএস পদমর্যাদার আধিকারিকদের এই দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু পর্যাপ্ত অফিসার না থাকায় বাধ্য হয়ে অনেক জায়গায় অবসরপ্রাপ্ত এক্সিকিউটিভ অফিসারদের পুনর্নিয়োগ করতে হচ্ছে।
সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসারদের চাকরির মেয়াদ বাড়াতে গেলে এ বার থেকে পুরপ্রধানদের চিঠি লাগবে। সংশ্লিষ্ট এক্সিকিউটিভ অফিসারের কাজের খতিয়ান তথা ‘পারফরম্যান্স রিপোর্ট’ও জমা দিতে হবে।
তাতে জানাতে হবে–তিনি কতদিন চাকরি করছেন, কত বার ছুটি নিয়েছেন, কত বার দেরিতে অফিসে ঢুকেছেন বা ছুটির আগে অফিস থেকে বেরিয়ে গেছেন, ছুটি না নিয়ে কতদিন অফিসে আসেননি।
সেই সঙ্গে কাজ করার সক্ষমতা রয়েছে কিনা, অধস্তন কর্মীদের সঙ্গে মানিয়ে চলতে পারেন কিনা, ঠিকঠাক দায়িত্ব পালন করেন কিনা, কাজের অভিজ্ঞতার তথ্যও রিপোর্ট আকারে পাঠাতে হবে পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরে। সেটা দেখার পরেই সেই এক্সিকিউটিভ অফিসারের চাকরির মেয়াদ আর বাড়ানো হবে কিনা, সিদ্ধান্ত নেবে পুরদপ্তর।