বর্ধমান ও রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে পড়ুয়া ভর্তি-চক্রে এখনও অবধি ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশ। তদন্তে নেমে বর্ধমান থানার পুলিশ জানতে পেরেছিল দেশের বহু রাজ্যে এই চক্রটি সক্রিয়। ধৃতদের বিবরণ দিয়ে বিষয়টি জানানো হয় পুলিশ ডিরেক্টরেটে। এর পরে বিহার, মহারাষ্ট্র, কলকাতা, ওডিশা থেকে ধৃতদের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয় রাজ্য পুলিশের সদর দপ্তর ভবানী ভবনের কাছে।
তখনই জানা যায়, নাসিকের এক ছাত্রীর থেকে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোটায় ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নামে ৩০ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে প্রতারকরা। আর্থিক লেনদেন হয় মুচিপাড়া থানা এলাকায়। শীলা ঠাকুর নামে নাসিকের ডায়মন্ড নগরের ওই পড়ুয়া পুরো বিষয়টি জানিয়ে সেখানকার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগ পাঠানো হয় মুচিপাড়ায় থানায়।
মুচিপাড়া থানা থেকে প্রতারিত ছাত্রীটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারি মুচিপাড়া থানায় এসে ওই ছাত্রী ফের অভিযোগ জানান। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুক্রবার মুচিপাড়া থানার পুলিশ আদালতের অনুমতি নিয়ে বর্ধমান সংশোধনাগারে বন্দি পীযূষকান্তি ঘড়াই, শেখ সন্তু, রহমান শেখ ও বিক্রম ঠাকুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
মেডিক্যাল কোর্সে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এই ৪ জনকে। মুচিপাড়া থানার তদন্তকারীদের দাবি, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাসিকের ওই পড়ুয়ার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে ধৃতরা। এ বিষয়ে ধৃতদের আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজেদের হেফাজতে পেতে চান তদন্তকারীরা। তার জন্য তাঁরা আবেদন জানাবেন বর্ধমান আদালতে।
জেলা আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, নাসিকের বাসিন্দা শীলা অভিযোগে জানিয়েছেন, এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির নামে তাঁর কাছ থেকে ৩০ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়। মুচিপাড়া থানা এলাকার একটি হোটেলে সেই আর্থিক লেনদেন হয়েছিল। প্রতারকরা তাঁকে ভর্তি সংক্রান্ত একটি চিঠি দেয়। পরে জানা গিয়েছিল, সেটি জাল।
প্রতারণায় ৫ জন জড়িত বলে অভিযোগে জানান শীলা। তদন্তে আসা মুচিপাড়া থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘প্রতারকরা গোটা অপারেশনটি চালিয়েছে এক ঘণ্টার মধ্যে। দুই ধাপে টাকা নেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পরে আমরা প্রাথমিক ভাবে নিশ্চিত হয়েছি, ধৃতরা এই ঘটনায় জড়িত। এবার আদালতের অনুমতি পেলে ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হবে।’