ডিটেকটিভ এজেন্সি হিসাবে যাদের নাম, তারাই রাজ্য সরকারের চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগের দায়িত্ব সামলাচ্ছে ‘প্লেসমেন্ট এজেন্সি’ হিসাবে। চলতি মাসেই রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরে বিভিন্ন পদে চুক্তির ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগ হতে চলেছে। মূলত ভেটেরনারি ডাক্তার, ভেটেরনারি ফার্মাসিস্ট, গাড়িচালক, অ্যানিমাল অ্যাটেন্ড্যান্টের পদগুলিতে বিভিন্ন জেলায় নিয়োগ হবে। তার মধ্যে পূর্ব বর্ধমান, নদিয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ ও জলপাইগুড়ি জেলা, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে নিয়োগের এজেন্সি হিসাবে বাছা হয়েছে একটি বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থাকে।
বুধবার ৮৪ এ পার্ক স্ট্রিটে ওই সংস্থার অফিসে নিয়োগের ব্যাপারে খোঁজ করলে সংস্থার তরফে তাপস ভট্টাচার্যের বক্তব্য, সংবাদমাধ্যমে দেওয়া বিজ্ঞাপনে সিকিওরিটি অ্যান্ড ডিটেকটিভ এজেন্সির নাম-ঠিকানা থাকলেও কোনও প্রার্থীর এখানে আসার দরকার নেই। নিয়োগে উৎসাহীরা জেলাওয়াড়ি তারিখ অনুযায়ী সরাসরি তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র, সচিত্র পরিচয়পত্র-সহ নানা নথি নিয়ে যাবেন সল্টলেকে, পশ্চিমবঙ্গ প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন নিগমের অফিসে। ‘ওয়াক ইন ইন্টারভিউ’-এর ব্যবস্থা হয়েছে সেখানেই।
ইন্টারভিউ কারা নেবেন?
তাপস বলেন, “আমরাই নেব। শুধু লোক নেওয়া নয়, এঁরা আমাদের আওতায় কাজ করবেন। আমরাই তাঁদের বেতন-ভাতা দেবো। সরকার অবশ্য এর জন্য টাকা দেবে।” কিন্তু প্রাণী চিকিৎসক বা ভেটেরনারি ফার্মাসিস্টের মতো পেশাদার ও বৈজ্ঞানিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মানবসম্পদের ইন্টারভিউ কী ভাবে একটি গোয়েন্দা সংস্থা নিতে পারে? এ তো ‘সিকিওরিটি গার্ডের’ নিয়োগ নয়।
তাপসের আশ্বাস, “আমরা ডিটেকটিভ এজেন্সি হলেও, নিয়োগ সংস্থা হিসাবেও কাজ করি। আর ইন্টারভিউ নেওয়ার সময়ে বিশেষজ্ঞদেরও আমরা রাখব। এর আগেও এজেন্সির মাধ্যমে প্রাণী চিকিৎসকের পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হয়েছে।”
এই ব্যাপারে বিভাগীয় সচিব বিবেক কুমারের যুক্তি, “প্রতিযোগিতার বাতাবরণ বজায় রাখতে টেন্ডারের মাধ্যমে তিনটি এজেন্সিকে বাছাই করা হয়েছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল পোলট্রি ফেডারেশন ও পশ্চিমবঙ্গ গো সম্পদ বিকাশ সংস্থাও রয়েছে নিয়োগের এজেন্সি হিসাবে।”
তবে সারা বাংলা প্রাণিসেবী, প্রাণিবন্ধু, প্রাণিমিত্র এ আই ওয়ার্কাস ফেডারেশনের নেতা বিবেকানন্দ পান্ডের কটাক্ষ, “প্রাণিসম্পদ বিকাশে পোলট্রি ফেডারেশন বা গো সম্পদ বিকাশ সংস্থার তবু ইতিবাচক ভূমিকা আছে। কিন্তু ডিটেকটিভ এজেন্সি দিয়ে ডাক্তার-ফার্মাসিস্ট নিয়োগ কতটা বিজ্ঞানসম্মত, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।”