এই সময়, আসানসোল: উচ্চশিক্ষা, কৃষি বা শিল্প- রাজ্য সরকারের প্রকল্পের আওতায় এই তিন ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কে ঋণের জন্য আবেদন করলে খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে অনেককে। অভিযোগ, রাজ্য সরকারের ঋণ সংক্রান্ত আবেদনে সে ভাবে সাড়া দিচ্ছে না পশ্চিম বর্ধমানের একাধিক ব্যাঙ্ক। এতে জেলা প্রশাসন অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। গত শনিবার জেলার ২২টি ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করে নিয়ম অনুযায়ী ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলিকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ।

HDFC Data Breach: এইচডিএফসি গ্রাহকদের বিপুল ডেটা হ্যাকারদের হাতে? ধোঁয়াশা স্পষ্ট করল ব্যাঙ্ক
ব্যাঙ্কগুলির তরফে এলডিএম বা লিড ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার জয়দেব আঢ্য জানান, এদের মধ্যে যে ব্যাঙ্কটির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ উঠেছে সেই ব্যঙ্কের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তিনি সোমবার একটি বৈঠক করেন। বাকি ব্যাঙ্কগুলির বিষয়েও তাঁরা দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন। এ নিয়ে প্রতিটি ব্যাঙ্কের থেকে ঋণের আবেদনের বিষয় নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ঋণ শিবির করার কথাও ভাবছেন তাঁরা।

Bank Loan: ব্যাঙ্ক থেকে 20 টি কোম্পানি নিয়েছে বিশাল অঙ্কের লোন, আদানি কান্ডের পর নজরদারি RBI-এর
নিয়ম অনুযায়ী একটি ব্যাঙ্কে আমানতকারীদের যত টাকা জমা পড়ে তার ৬০ শতাংশ অবধি ঋণ দেওয়া যায়। যাকে বলে ক্রেডিট ডেপোজিট রেশিও। বরাবরই জেলার ব্যাঙ্কগুলিতে আমানতকারীদের জমাকৃত টাকার উপরে ঋণ দেওয়ার হার কম ছিল। গত তিন মাসে সামগ্রিক ভাবে এটি আরও কমে ৪১ শতাংশ হয়ে গিয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। সেখানে ইউকো ব্যাঙ্কের ক্রেডিট ডেপোজিট রেশিও ১১ শতাংশের নীচে আছে। স্টেট ব্যাঙ্ক বা অন্যান্য ব্যাঙ্কগুলির ক্ষেত্রেও ঋণ প্রদানের হার অনেক কম।

FD Rates: FD-তে পাওয়া যাবে 9.5 শতাংশ সুদ, সিনিয়র সিটিজেনের জন্য দারুণ সুযোগ!
জেলায় স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পে দায়িত্বে থাকা অন্যতম আধিকারিক এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তমোজিৎ চক্রবর্তী সোমবার জানান, গত ১০ মার্চ পর্যন্ত স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের উপর ভিত্তি করে ঋণের জন্য ৬,২৩৩ জন ছাত্রছাত্রীর আবেদন সঠিক বলে গ্রহণ করেছিল ব্যাঙ্কগুলি। তাঁদের মধ্যে ১,৩৮৭ জন ছাত্রছাত্রীকে ঋণ দেওয়া হবে কিনা তা আজও ব্যাঙ্কে তরফ থেকে পরিষ্কার জানানো হয়নি।

Bank of Baroda: BOB ফাইন্যান্সিয়াল সলিউশনের 49 শতাংশ বিক্রি! বড় ঘোষণা ব্যাঙ্ক অফ বরোদার
ইউকো ব্যাঙ্কে আবেদনকারী ৩৭১ জনের মধ্যে ১৪৭ জনের আবেদন অনুমোদিত হয়েছে। ৭০ জনের আবেদন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। যে সব ব্যাঙ্ক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের ঋণ মঞ্জুর করেনি তাঁদের ফের অভ্যন্তরীন তদন্ত করতে বলা হয়েছে।

শুধু স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড নয়, কৃষি ঋণের ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে বেশ কিছু ব্যাঙ্ক বছরের পর বছর আবেদনকারী চাষিদের ঋণ দেয়নি। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ঋণ পেতে যাঁরা ব্যাঙ্কে যাচ্ছেন তাঁদের নানা ভাবে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ফেডারেশন অফ সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্সের সাধারণ সম্পাদক রাজেন্দ্র প্রসাদ খৈতান।

Home Loan Rule: হোম লোনে গ্রাহকদের জন্য জরুরি খবর! কত বার EMI বাউন্সে নিলাম হতে পারে বাড়ি?
তিনি বলেন, ‘একদিকে ক্ষুদ্র শিল্পগুলিকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা। অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা প্রকল্পেও ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলি গড়িমসি করছে। অথচ পশ্চিম বর্ধমান একটা ব্যবসায়িক জেলা। এখান থেকে ব্যাঙ্কগুলি আমানত হিসেবে প্রচুর টাকা সংগ্রহ করে থাকে।’ এ দিকে, এই পরিস্থিতির নেপথ্যে রাজনীতির রঙও দেখছেন কোনও কোনও আবেদনকারী। এতে শিক্ষা, ব্যবসা, শিল্প, কৃষি- সব ক্ষেত্রই একটা বড় ধাক্কা খেতে পারে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version