রাজ্য জুড়ে দুর্নীতির অভিযোগে জড়িয়েছে একাধিক তৃণমূল নেতার নাম। এরই মাঝে গোঘাটে দেখা গেল এক অন্য চিত্র। গোঘাটের রঘুবাটী পঞ্চায়েত প্রধানের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ও জীবন সংগ্রামের দৃশ্য। প্রায় পাঁচ বছর প্রধান পদে থাকার পরেও নিয়মিত চা-ঘুগনি আর চপ-মুড়ি বিক্রি করে সংসার চালাতে হচ্ছে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানকে। নিয়মিত এই ছবি দেখা যায় আরামবাগ-বাঁকুড়া ২ নম্বর রাজ্য সড়কের পাশে গোঘাটের মদিনা সংলগ্ন এলাকায়। ওই প্রধানের নাম সুষমা সাঁতরা।
বছর পাঁচেক আগে রঘুবাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের সীতানগর থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন সজ্জন সৎ বলে এলাকায় পরিচিতি রয়েছে। কিন্তু তাঁর জমি জমা তেমন কিছুই নেই। তাই বাধ্য হয়ে প্রায় সাত-আট বছর ধরে চা ও চপের দোকান চালিয়েই তাঁদের সংসার চলে। প্রধান পদের সাম্মানিকও খুব বেশি নয়। তাই সংসার চালানো দায় হয়ে পড়ছিল।
তাছাড়া বাড়িতে বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়ি এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তাই সংসার চালাতে ভরসা ওই দোকান। কিন্তু, পঞ্চায়েতের প্রধান হওয়ায় দোকানে পুরো সময় দিতে পারছিলেন না তিনি। বাধ্য হয়ে দোকান চালাতে স্বামী অনুপ সাঁতরাকে অন্যের গাড়ি চালানোর কাজ ছেড়ে দিতে হয়েছে। পাশাপাশি শাশুড়িকেও দোকান চালানোর কাজে সাহায্য করতে হয়।
পঞ্চায়েতের কাজ না থাকলে সুষমাদেবী নিজেও সকাল-সন্ধ্যায় দুই কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে আসা যাওয়া করেন। এখনও নিজে দোকানে বসে চা ও চপ-মুড়ি বিক্রি করেন। প্রধান হলেও এখনও দোকানে বিদ্যুতের সংযোগ পর্যন্ত নেই। ফলে অনেক কষ্টের মধ্যেই তাঁদেরকে দোকান চালাতে হয়। এরকম এক সৎ মানুষকে প্রধান পেয়ে এলাকার মানুষও খুব খুশি। প্রধানের কথা তুলতেই তাঁরা তাঁর কাজে সন্তোষ প্রকাশ করেছে।