অবশেষে আসন্ন পঞ্চায়েতে ভোট বয়কটের ডাক দিলেন গোঘাটের মান্দারন পঞ্চায়েতের নলডুবি শিবতলা এলাকার প্রায় শতাধিক ভোটার। আর এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় আরামবাগ মহকুমার রাজনৈতিক মহলে। অনুন্নত ও পিছিয়ে পরা ওই গ্রামের মানুষের দাবি, এলাকার জল নিকাশির জন্য আগে নিকাশি নালা ছিল।
কিন্তু কয়েক বছর ধরে সেই নালা জবরদখল করে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর এই ঘটনার পর থেকেই বৃষ্টি হলেই জল জমে যায় এলাকায়। চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় গ্রামবাসীকে। এলাকাবাসীর আরো দাবি, স্থানীয় এলাকায় মাটির বাড়ির সংখ্যা বেশি।
ফলত জমা জল মাটির বাড়ির চরম ক্ষতি করে। এই নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে ব্লক প্রশাসন, শাসকদলের স্থানীয় নেতা-নেত্রীদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে আবেদন নিবেদন করেও কোনও কাজই হয়নি। ফলত, ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা এবার ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছে।
তাদের দাবি, আগে জল নিকাশি ব্যবস্থা করা হোক, তবে ভোট দেওয়া হবে। এই বিষয়ে স্থানীয় গৃহবধূ আরতি রায় বলেন, “এখানে আগে জল নিকাশি ব্যবস্থা ছিলো। কিন্তু বর্তমানে তা দখল হয়ে যায়। সামান্য বৃষ্টি হলেই চারিদিকে জল জমে যায়। ৫০-৬০ মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সবাইকে জানানো হলেও কাজ হয়নি। তাই ভোট দিতে যাবো না।”
অপরদিকে, গ্রামবাসী মনোরমা রায় জানান, ভোটের সময় দুয়ারে দুয়ারে আসছে। কিন্তু ভোট চলে গেলেই কেউ মনে রাখছে না। জল নিকাশির ব্যবস্থা না করায় আমরা ব্যাপক সমস্যায় আছি। গ্রামে প্রায় সব মাটির বাড়ি। জল জমে মাটির বাড়ি ধসে যাচ্ছে। ড্রেন করতে গেলে মারধর করা হবে বলে হুমকি দেয়। তাই ড্রেন না হলে আমরা ভোট দেব না।
তবে ভোট বয়কট প্রসঙ্গে গোঘাটের BJP নেত্রী দোলন রায় বলেন, “তৃণমূল দল চোরেদের দল। ভোট দেওয়া গণতান্ত্রিক অধিকার। তাই ভোট বয়কট না করে ভোট দিয়ে প্রতিবাদ করুন।”
অপরদিকে, গোঘাট দুই নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনিমা কাটারী বলেন, ভোট বয়কট উচিত নয়। আমার বিষয়টি জানা ছিল না। নিশ্চয়ই বিষয়টি দেখা হবে। পাশাপাশি ওই ব্লকের তৃণমূল সভাপতি অরুন ক্যাওড়া বলেন, “ভোট বয়কট সমস্যার সমাধান নয়। ওঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকুক, আমরা সমাধান করে দেব।”
সবমিলিয়ে গোঘাটের নলডুবি এলাকার মানুষের ভোট বয়কট ডাক রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ায় রাজনৈতিক মহলে।