স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় সাহু বলেন, ‘ছাত্রবাস নির্ভর স্কুল বললেই চলে। ২০২২ সালে ছাত্রাবাসে থাকা ৮০ জন আবাসিকের মধ্যে ৭৫ জনই তফসিলি উপজাতির। ৫ জন তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ভুক্ত। তফসিলি জাতির ৫ জন ছাত্রের ৫০ হাজার টাকা পেয়েছি। ২০২২ সালের তফসিলি উপজাতির ৭৫ জন আবাসিকের কোনও টাকা আসেনি। নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে দু’লক্ষ টাকা দিয়েছি।
অন্যান্য শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। ছাত্রাবাস চালাতে গিয়ে বাজার দোকানে প্রায় সাত লক্ষ টাকা দেনা। এবার পাওনাদাররা টাকার জন্য তাড়া দিচ্ছেন। ফোন করে বলছেন, টাকা দিন, টাকা দিন। সমস্যায় পড়ছেন স্থানীয় শিক্ষকরা।’
নিরুপায় হয়ে এবার ব্লক প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। তিনি লিখেছেন, ‘বিষয়টি সহানুভূতির সহিত দেখুন। ছাত্রগুলির ভবিষ্যৎ নষ্ট যেন না হয়!’ অভিভাবকদের মিটিং ডেকে সাহায্যের আবেদনও করেছেন তিনি। অভিভাবকদের কাছে তাঁর আবেদন, ‘যতদিন না টাকা আসছে, আপনারা কিছু কিছু টাকা দিয়ে সাহায্য করুন। না হলে হস্টেল চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ছে।’
প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘নিরুপায় হয়ে বিডিও-র কাছে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানিয়েছি। অভিভাবকদের মিটিং ডেকে তাঁদের কাছে সাহায্য চেয়েছি। বলেছি, আপনারা এখন টাকা-পয়সা দিয়ে সাহায্য করুন। সরকারের টাকা এলে আপনাদের টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে। আগামী ৫ এপ্রিল আবার একটি অভিভাবক মিটিং ডাকা হয়েছে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে আবার আলোচনা হবে। সবাই সাহায্য না করলে ছাত্রাবাস চালানো কঠিন।’
জেলার অধিকাংশ তফসিলি উপজাতি ছাত্রাবাসেই আবাসিকদের বরাদ্দ অর্থ এসে পৌঁছায়নি। ফলে হিমশিম দশা সব জায়গাতেই। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় স্কুল সংশ্লিষ্ট এমন তফসিলি উপজাতির ছাত্রাবাস রয়েছে প্রায় ৩৫০টি।
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি বলেন, ‘এর আগেও একটা সমস্যা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখছি। আশা করি, খুব তাড়াতাড়ি সব স্কুলই ছাত্রাবাসের টাকা পেয়ে যাবে।’