৬৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসবাদের পর বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। নিয়োগ দুর্নীতিতে তৃণমূল বিধায়ক সরাসরি জড়িত বলে দাবি করেছেন তদন্তকারী সংস্থা। কে এই জীবনকৃষ্ণ? কীভাবে রাজনীতিতে তাঁর উত্থান? এই গল্প যে কোনও সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানাবে। গোরু পাচারকাণ্ডে বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি। রাজনীতিতে অন্যান্যদের পিছনে ফেলে জেটগতিতে জীবনের উত্থানের পিছনে অনুব্রতর বড় ভূমিকা রয়েছে বলে দাবি করছেন অনেকে।

Recruitment Scam Case : শেষরক্ষা হল না , তৃণমূল বিধায়কের পুকুর থেকে মোবাইল উদ্ধার CBI-এর
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বড়ঞার আন্দি এলাকার ব্যবসায়ী পরিবারে তাঁর জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। ২০০৪ সালে বেলডাঙার প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক পদে যোগ দেন জীবন। সেখান থেকে তাঁর উত্থানের শুরু। ২০১২ সালে এসএসসি উত্তীর্ণ হয়ে বীরভূম জেলার নানুরের দেবগ্রাম হাই স্কুলে শিক্ষক পদে যোগ দেন জীবনকৃষ্ণ।

Jiban Krishna Saha : জীবনকৃষ্ণকে নিয়ে আলিপুর আদালতের পথে CBI, জিজ্ঞাসাবাদে আরও ৮ বিধায়কের নাম!
কর্মসূত্রে বীরভূমের স্কুলে চাকরিতে যোগ দে্ওয়ার পর থেকে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা শুরু। এমনকী বোলপুরের নিচুপট্টিতে কেষ্টর বাড়িতে তাঁর অবাধ যাতায়াত ছিল। বীরভূম জেলায় ফ্ল্যাট, চালকল, হিমঘর ও জমি সহ একাধিক সম্পত্তি রয়েছে তাঁর, এমনটাই জানা গিয়েছে। কয়েক বছরের মধ্যেই এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি করেছেন জীবন, স্থানীয়দের এমনটা অভিযোগ। এমনকী মুর্শিদাবাদের আন্দি এলাকায় জীবনকৃষ্ণ একাধিক সম্পত্তি ক্রয় করেন বলে জানা গিয়েছে। কলকাতাতেও তাঁর ফ্ল্যাট রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

সম্পত্তির পাশাপাশি বাড়তে থাকে তাঁর প্রভাব প্রতিপত্তিও। রাজ্যের এক প্রাক্তন মন্ত্রী ও শিক্ষাদফতের কর্তাদের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। তাঁদের সুপারিশেই রাজনীতিতে হাতে খড়ি হয় জীবনকৃষ্ণের। শিক্ষকতার সুবাদেই কৌশিক ঘোষ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক তৈরি হয়। সেখান থেকে নিয়োগ দুর্নীতির জাল বোনেন এই দু’জন। বীরভূম, মুর্শিদাবাদ সহ একাধিক জেলায় এই জুটির হাত ধরে টাকার বিনিময়ে চাকরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

Jiban Krishna Saha : পুকুর ছেঁচে একটি ফোন ও শোল মাছ
রাজনীতিতেও বিচক্ষণতার পরিচয় দেন জীবনকৃষ্ণ। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপি ১৮টি আসনে জেতার পর গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। এমনকী ২০২১ সালের বিধানসভাতে বিজেপির টিকিটে বড়ঞার প্রার্থী হওয়াই জীবনের প্রথম পছন্দ ছিল বলে শোনা যায়। বিজেপির টিকিট না পেয়ে প্রভাব খাটিয়ে তৃণমূলের টিকিট জোগাড় করেন জীবন।খুব অল্প ব্যবধানে ভোটে জিতে বিধায়ক হন।

বিধায়ক হওয়ার পর জীবনের প্রভাব ও প্রতিপত্তি আরও বাড়তে থাকে। বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের কয়েক মাসের মধ্যেই বড়ঞা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতিও হন। তবে মাস কয়েক আগে তাঁকে সেই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এমনকী ধৃত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতেও তাঁর যাতায়াত ছিল বলে জানা গিয়েছে। কৌশিক ঘোষ সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরই জীবনকে সিবিআইয় জিজ্ঞাসাবাদের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। শেষমেশ তাঁকে গ্রেফতার করা হল।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version