এই সময়, দুর্গাপুর: ছিল বিজেপির পার্টি অফিস, হয়ে যাচ্ছে রেস্তরাঁ। দুর্গাপুর পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সিটি সেন্টারে ডক্টরস কলোনির শ্যামাপ্রসাদ ভবন আগামী দিনে মুখরোচক খাবারের আখড়া হয়ে উঠবে। দিনকয়েক বাদেই এর উদ্বোধন হওয়ার কথা। দলীয় কার্যালয়ের এহেন ভোলবদলে দলের অন্দরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। দলের জেলা নেতাদের দাবি, ডক্টরস কলোনিতে তাঁদের কোনও দলীয় কার্যালয় ছিল না।

TMC Leader : ‘শুভেন্দুর সভায় কারা যাচ্ছেন লিখে রাখুন…’, বাঁকুড়ায় দলীয় কর্মীদের হুঁশিয়ারি TMC ব্লক সভাপতির!
দলেরই এক কর্মী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে নিজের বাড়ির নামকরণ করেছিলেন। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু নেতাদের এই সাফাই মানতে নারাজ দলের নিচুতলার কর্মীরা। তাঁদের কথায়, দলের একাধিক কর্মসূচি পালন করা হয়েছে শ্যামাপ্রসাদ ভবনে। নেতাদের উপস্থিতিতে স্বামী বিবেকানন্দ, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন পালন করা হয়েছে।

Abhishek Banerjee : অভিষেকের নবজোয়ারের মাঝেই জোর ধাক্কা! তুফানগঞ্জে দলত্যাগ ৩২ তৃণমূল কর্মীর
২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই পার্টি অফিসকে যথেচ্ছ ব্যবহার করেছে দল। বিজেপির এক কর্মী বলেন, ‘ব্যক্তিগত বাড়ি পার্টি অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হলো কেন? বিতর্ক এড়াতে নেতারা এখন দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন। কিন্তু ওই কার্যালয়ে তাঁরা আসতেন কেন তাঁর কোনও উত্তর দিতে পারছেন না।’ দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই জানিয়েছেন, ওই অফিসে তিনি একবার গিয়েছিলেন।

Mukul Roy : মুকুলে বিভ্রান্তি, বিক্ষোভ পদ্মে
বলেন, ‘দলের এক কর্মী ব্যক্তিগত স্বার্থে তাঁর বাড়ির নামকরণ করেছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে। হয়তো স্বার্থপূরণ হয়নি তাই এখন শ্যামাপ্রসাদের নাম বদল করে ওখানে রেস্তরাঁ করছেন। এটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি ওই বাড়িতে একবার গিয়েছিলাম।’ হোটেল ও রেস্তরাঁ ব্যবসায়ী মনোহর কোনার ২০১৭ সালে সিটি সেন্টারে বাড়িটি কিনেছিলেন। পুরোনো সেই বাড়ির খোলনলচে বদল করে মনোহর তার নাম দেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে।

West Bengal BJP : রাজ্যের সুরে টাকা চাইছে বঙ্গ-বিজেপি
বাড়ির প্রবেশপথে বড় করে লেখা হয়, শ্যামাপ্রসাদ ভবন। তার পর থেকে মনীষীদের জন্মদিন, দলীয় মিটিং, রক্তদান শিবিরের মতো কর্মসূচি পালিত হয়েছে ওই বাড়িতে। শহরের প্রাণকেন্দ্র সিটি সেন্টারে ওই বাড়িটিকে বিজেপির কার্যালয় বলেই জানতেন দলের কর্মী থেকে সাধারণ মানুষ। কিন্তু এখন তার ভোলবদলের ঘটনায় বিজেপির জেলা গুণীজন সেলের সভাপতি অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দলে গুরুত্ব হারিয়েছেন মনোহর কোনার। ঠিক মতো কাজ করতে পারছিলেন না। দীর্ঘদিন ধরে উনি হোটেল ও রেস্তরাঁ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।

Abhishek Banerjee : মমতা-জনতার মধ্যে দেওয়াল ভাঙার বার্তা
সেই জন্যেই সিটি সেন্টারের মতো জায়গায় ওখানে রেস্তরাঁ করছেন মনোহর।’ সম্প্রতি ডক্টরস কলোনির ওই বাড়ির সামনে থেকে শ্যামাপ্রসাদ ভবন লেখাটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বদলে সেখানে কলকাতার একটি নামী রোস্তরাঁর ফ্লেক্স ঝোলানো রয়েছে। রেস্তরাঁ তৈরির কাজ চলছে জোরকদমে। মনোহর নিজেকে এখনও দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী বলে দাবি করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি এখনও দলের তাঁতশিল্প সংগঠনের রাঢ়বঙ্গের কনভেনার পদে রয়েছি। ডক্টরস কলোনির ওই বাড়িতে দলের অনেকেই এসেছেন।

Suvendu Adhikari : দরজায় তালা, চাবি না-মেলায় ঘরে ঢুকতে পারলেন না শুভেন্দু
আমাকে দল টিকিট দেয়নি বলে ক্ষোভে ওই রেস্তরাঁ করছি, সেটা ঠিক নয়।’ এমন ঘটনায় কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না সিপিএম, তৃণমূল। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘বিজেপি কি অফিসের ভাড়া শোধ করেছিল? অবশ্য বিজেপি নেতা রেস্তরাঁ করবেন না শপিং মল করবেন তা ওদের ব্যাপার।’ অন্য দিকে, পুরসভার বিদায়ী কাউন্সিলার তৃণমূল নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘মনোহর ভেবেছিলেন তিনি টিকিট পাবেন। দল তাঁকে টিকিট দেয়নি। ব্যস পার্টি অফিসও উঠে গেল। এটাই তো বিজেপির কালচার।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version