প্রসেনজিত্ সরদার: খুনের ছক ভেস্তে দিল পুলিস। শুধু তাই নয়, ওই খুনের ষড়যন্ত্রে জড়িত এক তৃণমূল কর্মী-সহ মোট ৪ জন ধরা পড়ল নাকা চেকিংয়ের সময়ে। ধৃতদের কাছ থেকে আগ্নেয় অস্ত্র-সহ বেশকিছু অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এনিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়।
আরও পড়ুন-আসানসোলে বিজেপি নেতা খুনের পেছনে তাঁরই পরিচিত! খুনিকে ধরতে পুলিসকে সময়সীমা বেঁধে দিলেন অগ্নিমিত্রা
রবিবার রাতে নাকা চেকিং চলাকালীন বারুইপুরগামী একটি গাড়িকে ধাওয়া করে পুলিস। তারপর গাড়ির লোকজনকে জেরা করতেই পিস্তল, চপার, মোবাইল ফোন-সহ একাধিক অস্ত্র ও নগদ টাকা উদ্ধার হয়। ওই চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ক্যানিংয়ের বাহির সোনা এলাকায়।
যে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন খলিল মোল্লা নামে এক ব্যক্তি। একয়ম ক্যানিং দারিয়া অঞ্চলের নেতা ছিলেন এই খলিল মোল্লা। ক্যানিং দারিয়া অঞ্চলের অঞ্চল সভাপতি ছিল খলিল মোল্লা। ২০১৯ সালে তৃণমূলের এক অঞ্চল প্রধানের স্বামীকে খুন করে খলিল মোল্লা। সেই খুনে কারণ তার জেলও হয়।
পুলিস সূত্রে খবর, দারিয়ার বুথ সভাপতি বাবুর আলি লস্করকে খুন করার ছক কষেছিল খলিল। সেই খুনের জন্য তারা কাল বেরিয়েছিল। বাবুর আলি মোল্লার দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের আগে এলাকা দখলের জন্যই তাঁকে মেরে ফেলার চক্রান্ত করেছে খলিল। গতকাল বারুইপুর থেকে তাঁর বাড়ি ফেরার কথা ছিল।
দলের তরফে এনিয়ে এখনও কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে বাবুর আলি লস্কর বলেন, আমাকে মার্ডার করার চক কষেছিল খলিল। এখানে একজন টিপার ছিল। তাকে আজ সকালে ধরা হয়। সে জানায়, আমাকে খুন করার জন্য কয়েক দিন ধরে তার কাছে আসছে। গতকাল আমার হুগলির এক জয়গা যাওয়ার কথা ছিল। ঠিক হয় ফেরার পথে আমাকে খুন করা হবে। খবর দেওয়ার জন্য ওই টিপারের ফোনে পয়সা ভরে দিয়েছে খলিল আলি মোল্লা।
পুলিসের তরফে বলা হয়, বেশকিছু দিন ধরেই আমাদের কাছে খবর আসছিল খলিল মোল্লা নামে একজন একটা খুনের ষড়যন্ত্র করছে। সেই খবরের ভিত্তিতে নাকা চেকিংয়ের সময়ে খলিল মোল্লা-সহ মোট ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকী ৩ জন হল রমজান মোল্লা, আমিনুদ্দিন মোল্লা ও নজরুল লস্কর। তাদের কাছ থেকে আগ্নেয় অস্ত্র, কার্তুজ, চপার সহ অন্যান্য অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। খলিলকে জেরা করে জানা গিয়েছে ওকাউকে খুনের ষড়যন্ত্র করছিল। সেই প্ল্যান অনুযায়ী বাকী ৩ জনকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে ভাড়া করেছিল। সঙ্গে নিজেও ছিল। সেই ছক অনুযায়ী এদিন সে খুন জন্য যাচ্ছিল। এরপর আরও জেরা করলে বোঝা যাবে এর পেছনে আর কে কে জড়িত আছে। খলিল মোল্লার নামে আগেও অভিযোগ রয়েছে।
ওই গ্রেফতার নিয়ে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, রাজ্যটাকে এরা কাটমানির সামনে দাঁড়ি করিয়ে দিয়েছে। নীচের তলার নেতারা পুকুর বুজিয়েছে। এর জন্য চাই টাকা, অস্ত্র। যত দুস্কৃতী, সমাজ বিরোধী সবাই এখন তৃণমূলে।
অন্দিকে, এনিয়ে তৃণণূল মুখপাত্র শান্তনু সেন বলেন, পশ্চিমবঙ্গের পুলিস স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করে। উত্তর প্রদেশের মতো রাজ্যে দুষ্কৃতীদের এনকাউন্টার করে মেরে দেয় না। তৃণমূল যদি পঞ্চায়েত নির্বাচনে অস্ত্র মজুত করার চেষ্টা করত তাহলে পুলিস এতটা তত্পর হতে পারত না।