বর্তমান পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে, আরামবাগ মহকুমা এলাকার একের পর থানায় বউ পালানোর ডায়েরি করছেন স্বামীরা। বউহারা স্বামীদের বারবার তদ্বিরে কী করবেন ভেবে কুল কিনারা করতে পারছেন না পুলিশ আধিকারিকরা। সুপ্রিম রায়ের পর এই ধরনের ঘটনায় কোনও পদক্ষেপ করার রাস্তাও খুঁজে পাচ্ছেন না পুলিশ আধিকারিকরা। থানায় থানায় ক্রমেই জমছে অভিযোগের পাহাড়।
নাবালিকা বা অবিবাহিত তরুণী পালিয়ে গেলেও রাস্তা থাকে। কিন্তু প্রাপ্ত বয়স্ক নারী যদি তাঁর প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যান, তাতে আইন অনুযায়ী পুলিশের কোনও পদক্ষেপ করার নেই বলেই জানা গিয়েছে। কিন্তু, বউহারা স্বামীদের তা বোঝাতে সমস্যা পোহাতে হচ্ছে পুলিশ আধিকারিকদের। তাঁর কিছুতেই বুঝতে নারাজ। বউ ফিরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর প্রেমিকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের আবেদন জানাচ্ছেন স্বামীরা।
আরামবাগ মহকুমার একাধিক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, স্বামীরা বউ পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ নিয়ে তাঁদের দ্বারস্থ হচ্ছেন। বউ, সন্তান ফিরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি প্রেমিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার জন্য চাপ দিচ্ছেন। কিন্তু কোনও প্রাপ্তবয়স্করা স্বইচ্ছায় ঘর ছাড়লে আইনত কোনও পদক্ষেপ করা সম্ভব নয়, তা বোঝাতেই জেরবার পুলিশ আধিকারিকরা। পুরশুড়া থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, সম্প্রতি ভাঙামোড়ার বাসিন্দা বউ পালানোর অভিযোগ নিয়ে থানার দ্বারস্থ হয়েছিলেন। নয়া আইন তাঁকে বোঝাতে পুলিশ আধিকারিকদের কালঘাম ছু়টে যায়।
পুরশুড়া থানার আইসি সোমনাথ দে এই প্রসঙ্গে বর্তমান পত্রিকাকে বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অপরিণত ও নাবালিকাদের ঘরছাড়ার প্রবণতা দেখা যায়। সেই নিয়ে প্রচার চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু বউ পালানোর ক্ষেত্রে কিছু করার নেই। এই ধরনের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। অনেক সময় আমার দু’পক্ষকে ডেকে বিবাহ বিচ্ছেদের পরামর্শ দিচ্ছি।’
আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, ২০১৮ সালের আগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৭ নম্বর ধারায় পরকীয়া ছিল শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কোনও বিবাহিত মহিলার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর শাস্তির কথা আইনি বলা ছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তা বাতিল। এমনকী আরামবাগ আদালতে এই ধরনের মামলার সংখ্যা এখন নেই বললেই চলে বলে জানাচ্ছেন আইনজীবীরা।