তথাগত চক্রবর্তী: এগরার খাদিকুল গ্রামের বাজি কারখানার বিস্ফোরণ নিয়ে এবার জঙ্গি অ্যাঙ্গেল টেনে আনলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ওই বিস্ফোরণ নিয়ে গতকালই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেই কথার রেশ টেনে আজ ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে দিলীপবাবু বলেন, রাজ্যপাল রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। ওঁর দায়িত্ব যাতে রাজ্যে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে। এই ঘটনার পেছনে বিদেশি চক্রান্ত, জঙ্গিদের হাত থাকতে পারে। বিষয়টি রাজ্যপালের দেখা উচিত। কারণ এই সরকার চায় না সত্যিটা সামনে আসুক।

আরও পড়ুন-২০ বছর আগে কী ঘটেছিল ভানুর বাজি কারখানায়? এগরা বিস্ফোরণকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য!

খাদিকুলের ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় বাজি কারখানার মালিক ভানু বাগ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিস। অভিযোগ? অনিচ্ছাকৃত খুন ও বিস্ফোরক সামগ্রী ব্যবহারে গাফিলতি। এনিয়ে এবার সরব হলেন দিলীপ ঘোষ। বিজেপি নেতা বলেন, যে মামলা দেওয়া হয়েছে তাতে ২০০ টাকা জরিমানা হতে পারে। ২০-২২ জন মারা গিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী আড়াই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন। সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে অপরাধীদের উত্সাহ দিচ্ছে। একটা লোক ধরা পড়েও ছাড়া পেয়ে গেল। আবার সে অপরাধও করছে। গ্রামে ১৮ চাকার ট্রাকে মাল আসতো। পুলিস কিছু করেনি। পুলিসের উত্সাহেই এই ধরনের জিনিস হচ্ছে। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে  বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে এগরা ১ নম্বর ব্লকের সাহারা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার  খাদিকুল গ্রাম।  ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে বাজি কারখানায়। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, গ্রামের রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ছিন্নভিন্ন দেহ। এখনও পর্যন্ত মৃত ৯। এদের মধ্যে মহিলাও রয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ৭ জন। গতকালই ৬টি দেহ গ্রামে এসেছে।

বিস্ফোরক আইনের ধারা কেন বাদ? পুলিসের দাবি, ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আগুন জ্বলছে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা নমুনা সংগ্রহ করেছেন। রিপোর্টে যদি বিস্ফোরণের প্রমাণ মেলে, সেক্ষেত্রে বিস্ফোরক আইনে ধারা যুক্ত করা হবে। এদিকে পুলিসে এই যুক্তি অবশ্য মানতে নারাজ বিরোধীদের একাংশ। বরং তাদের অভিযোগ, সাধারণত বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের হলে তদন্তভার নেয় এনআইএ। সেকারণেই ইচ্ছাকৃতভাবে বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করা হয়নি।

এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গতকাল খাদিকুলে আসেন মানস ভুঁইঞা, দোলা সেন ও স্থানীয় বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র। তৃণমূল সূত্রে খবর, তৃণমূল প্রতিনিধি দলের উদ্দেশ্য ছিল আইন শৃঙ্খলার প্রশ্নে মানুষকে আশ্বাস দেওয়া, পুলিসের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া, আহত ও নিহতদের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া।  এদিন ঘটনাস্থলে তৃণমূল নেতারা আসার পর তাদের ঘিরে ধরে একদল লোক প্রবল বিক্ষোভ দেখান। তাদের মুখে ছিল  জয় শ্রীরাম, চোর চোর স্লোগান।  তাদের দাবি, এতে দেরিতে কেন এসেছেন নেতারা। যে ঘটনা ঘটেছে তাতে পুলিসের বড় ভূমিকা রয়েছে, শাসকদলের মদত ছাড়া দিনের পর দিন ওই কাণ্ড করতে পারত না ভানু বাগ। ওইসব ক্ষোভ তৃণমূল প্রতিনিধি দলের উপরে পড়ে। মাত্রা কয়েক মিনিট নিহতদের পারিবারের লোকজনদের সঙ্গে থেকে তারা চলে যেতে বাধ্য হন। তবে কথা বলেন পুলিসের সঙ্গেও। সবেমিলিয়ে মিনিট দশেক ছিলেন তাঁরা। 

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version