গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে ডোমকল মহকুমার তিনটি বিধানসভা। তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব, তৃণমূল সিপিএমের সংঘর্ষ, অশান্তি ছিল আগে থেকেই। এলাকার রাজনৈতিক মহলের দাবি, জলঙ্গি, ডোমকল বিধানসভায় তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব সব থেকে বেশি। গত চার মাসে জলঙ্গিতে বিধায়ক গোষ্ঠীর সঙ্গে ব্লক সভাপতির গোষ্ঠীর সংঘর্ষে অন্তত চারজন জখম হয়েছে।
অন্যদিকে, রানিনগর বিধানসভায় তৃণমূল সিপিএম সংঘর্ষ এবং বোমাবাজিতে রোজ উত্তপ্ত হচ্ছে এলাকা। বিরোধীদের অভিযোগ, “ব্লক তৃণমূল সভাপতি শাহ আলম সরকারের নেতৃত্বেই চলছে হামলা, বাড়ি ভাঙচুর।
পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যবাসীর নজর ছিল ডোমকলে। কোনওভাবেই যাতে অশান্তি ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য দেওয়া হয়েছিল বিশেষ নজর। মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে প্রথম দিনেই রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল রানিনগর।
বাম কংগ্রেস জোটের প্রতিরোধে কার্যত পিছু হঠতে হয়েছে তৃণমূলকে, দাবি স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। ডোমকলেও বাম কংগ্রেস জোটের দাবি, মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময় তৃণমূল কর্মীরা তাঁদের উপর চড়াও হয়েছিলেন। তাড়া খেয়ে ঘরে ঢুকতে হয়েছে তাঁদের।
জানা যাচ্ছে, ডোমকলে যে সমস্ত দোকানগুলিতে খেলার সামগ্রী পাওয়া যায় সেখানে একপ্রকাশ শূন্য উইকেট। অন্য ‘খেলা হবে’-র গন্ধ পাচ্ছেন এলাকাবাসী। সাংবাদিক বৈঠকে অধীর চৌধুরী উইকেটের পালটা বাম কংগ্রেস সমর্থকদের বাঁশ লাঠি ব্যবহারের নিদান দিয়েছেন।
শুধু উইকেট নয়, তপ্ত ডোমকলে ‘মহার্ঘ্য’ বাঁশও। ব্যাট-বাঁশে কি অশান্তির পূর্বাভাস! সিঁদুরে মেঘ দেখছেন এলাকার প্রবীণরা। স্থানীয় বাসিন্দা ৬০ ঊর্ধ্ব সুন্দর রায় বলেন, “এখন থেকেই যা মতি-গতি দেখছি তা কোনওভাবেই ভালো লাগছে না। আমরা এই বয়সে আর রক্ত দেখতে চাই না। শান্তিতে নির্বাচন হোক, এমনটাই চাইছি।”
এদিকে কড়া হাতে পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রস্তুত প্রশাসনও। জেলা পুলিশ সুপার সুরিন্দর সিং বলেন, “পরিস্থিতি যাই হোক পুলিশ প্রশাসন তার মোকাবিলা করতে প্রস্তুত রয়েছে।” অন্যদিকে, জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, “ডোমকলে সুস্থভাবেই মনোনয়ন জমা হয়েছে। উদ্বেগের কোনও কারণ আপাতত নেই।”