সুগত বন্দ্যোপাধ্যায়
কেন্দ্রীয় বাহিনী এলেও এলাকা টহলদারির মধ্যেই তাঁদের গতিবিধি নির্দিষ্ট থাকবে। অন্তত শুক্রবার রাত পর্যন্ত কমিশনের সিদ্ধান্ত তেমনই। পঞ্চায়েত ভোটে বুথের নিরাপত্তা এবং নজরদারির ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন রাজ্য পুলিশের উপরেই ভরসা করতে চায়। যদিও এটি কমিশনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত। এদিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা আসন্ন ভোটের নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর নোডাল অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।

WB Panchayat Polls : আসছে ৩১৫ কোম্পানি, বাকি বাহিনীতে অনিশ্চয়তা
বিষয়টি নিয়ে বিশদে আলোচনার জন্য রাজীব রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্যের সঙ্গে শীঘ্রই বৈঠকে বসবেন বলে কমিশন সূত্রে খবর। এদিন মাত্র পাঁচটি জেলাকে স্পর্শকাতর এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। বাকি ১৭ জেলার রিপোর্ট রবিবারের মধ্যে এসে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

পঞ্চায়েত ভোটে আরও ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনী নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে সাড়া না পেয়ে হতাশ রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রাজ্য কমিশনার রাজীব সিনহা এদিন বলেন, ‘৬৫ হাজার পুলিশ জেলাতে আছে। বাড়তি কয়েক কোম্পানি স্টেট স্পেশালাইজড ফোর্স রাজ্য দিচ্ছে।’ তবে বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়ন করা হবে কি না সে সর্ম্পকে কমিশনার সরাসরি কিছু বলতে চাননি।

Panchayat Election in West Bengal : বাহিনী মোতায়েন নিয়ে পত্রযুদ্ধে কেন্দ্র-কমিশন
কমিশন সূত্রের খবর, রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ মিলিয়ে ৮৫ হাজারের কিছু বেশি কর্মী ভোটের কাজে পাওয়া যাবে বলে রাজ্য সরকার জানিয়ে দিয়েছে। সূত্রের খবর, মোট ৬১ হাজার ৬৩৬ বুথে তাদেরই ব্যবহার করা হবে। পরিস্থিতি বুঝে অতি স্পর্শকাতর কিছু বুথের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে। কেন্দ্র শেষ পর্যন্ত কত কোম্পানি বাহিনী দিচ্ছে তার উপর ভিত্তি করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। প্রশ্ন উঠেছে, বুথে মোতায়েন করা না হলে, বিরোধীদের দাবি মতো আদালতের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে কি লাভ হল? যদিও বাহিনী কোথায় কী ভাবে কাজ করবে তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত আদালত কিছু বলেনি। তবে আগামী দিনে তেমন নির্দেশ যে আসবে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় কোনও পক্ষই।

Panchayat Election 2023 : কোথায় কত রাজ্য পুলিশ, এখনও ধন্দ জারি
ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাজ কী হবে? রাজ্য নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে তা নিয়ে চার দফা নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী মূলত এলাকা টহলদারী করবে। নাকা চেকিংয়ের দায়িত্বে থাকবে। এলাকায় মানুষের মধ্যে ভোট নিয়ে ভীতি দূর করতে কাজ করবে। আন্তঃরাজ্য সীমানা টহলদারীর কাজেও তাদের লাগানো হতে পারে। যাতে ভিন্ রাজ্য বা পড়শি দেশের বাসিন্দাদের অনুপ্রবেশ না ঘটে। স্পর্শকাতর বা অতিস্পর্শকাতর এলাকাতে অশান্তি যাতে না হয় সে জন্যও বাহিনীকে কাজে লাগানো হবে।

West Bengal Panchayat Election 2023 : একলপ্তে বাহিনী না-পেলে ভোট একদফায় কীভাবে? বোসের প্রশ্ন রাজীবকে
কমিশন জানিয়েছে, ভোটের জন্য রাজ্যে প্রথম দফায় ২২ কোম্পানি বাহিনী অনেক আগেই এসে গিয়েছে। প্রতি জেলায় এক কোম্পানি করে মোতায়নও করা হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় কমিশন আরও ৮০০ কোম্পানি বাহিনী চেয়েছিল। কেন্দ্র ৩১৫ কোম্পানি পাঠানো হবে বলে জানিয়েছিল। নির্বাচন কমিশনার এদিন জানান, এর মধ্যে ৬৫ কোম্পানি বাহিনী রাজ্যে পৌঁছে গিয়েছে। বাকি বাহিনী রবিবারের মধ্যে এসে যাবে। তবে বকেয়া ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনী আদৌ আসবে কিনা, তা পরিষ্কার নয়। এদিনের বৈঠকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিযুক্ত নোডাল অফিসার আইজি বিএসএফ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন। কমিশনও কেন্দ্রের কাছে বকেয়া বাহিনী চেয়ে আবারও আর্জি জানাবে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version