শ্যামগোপাল রায়
পথকুকুরের দাপট রুখতে মাস তিনেক আগে মানিকতলা এলাকায় গিয়েছিলেন পুরসভার কয়েকজন কর্মী। টার্গেট ছিল, নির্বীজকরণ এবং টিকাকরণের। সেখানে তাঁদের ঘিরে ধরেন কিছু পশুপ্রেমী। তাঁরা সাফ জানিয়ে দেন, এ সব করলে কুকুরের ক্ষতি হবে। জোর করে কুকুর ধরে নিয়ে গেলে রাস্তা অবরোধের হুমকিও দেন তাঁরা। বাধ্য হয়েই ফিরে আসেন ওই পুরকর্মীরা। ওই ঘটনার সপ্তাহখানেকের মধ্যেই বেলগাছিয়ায় পথকুকুরদের টিকাকরণ করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়তে হয় পুরকর্মীদের।

Tree Plantation : রাসবিহারী টু লালবাজার, গাছ মাত্রই কয়েক হাজার!
পুরকর্মীদের অভিযোগ, শহরের নানা প্রান্তে পথকুকুরের দৌরাত্ম্য রুখতে গিয়ে হামেশাই বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কলকাতায় ২০১৮-র ফেব্রুয়ারিতে পথকুকুরের সংখ্যা ছিল ৫৯,১০৩টি। ২০২৩-এর জুলাইয়ে তা বেড়ে হয়েছে ১ লক্ষ ১০ হাজার। ৫ বছরের মধ্যে পথকুকুরের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এই বাড়বাড়ন্তের জন্য করোনায় দু’বছর নির্বীজকরণ না হওয়া এবং বাসিন্দাদের একাংশের অসহযোগিতাকেই দায়ী করছেন কলকাতা পুরসভার কর্তারা। গত দু’মাসে বড়বাজারে পাঁচ জনকে কুকুরে কামড়েছে বলেও জানা গিয়েছে।

Kolkata Municipal Corporation : ‘ফেস’ চিনবে বায়োমেট্রিক, নয়া হাজিরা ব্যবস্থা এবার পুরসভাতেও
শনিবার পুর অধিবেশনে বড়বাজার এলাকার কাউন্সিলার মীনা দেবী পুরোহিত এই বিষয়টি নিয়ে সরব হন। তিনি জানান, পথকুকুর শুধু কামড়াচ্ছেই না, রাস্তাঘাটও নোংরা করছে। কুকুরের উপদ্রব যে শহরে বেড়েছে, তা মেনে নিচ্ছে পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগও। ওই বিভাগের এক কর্তার কথায়, ‘পথকুকুরের উৎপাতের অভিযোগ জানিয়ে কলকাতা পুরসভার কন্ট্রোল রুমে সপ্তাহে অন্তত ২০-২৫টি ফোন আসছে। আমরা টিকাকরণ এবং নির্বীজকরণের চেষ্টা চালাচ্ছি। কিন্তু, বাসিন্দাদের একাংশের অসহযোগিতার জন্য কাজে গতি আসছে না।’

Snake Bite : কলকাতা থেকে ডানকুনি! স্নেক বাইটের চিন্তা অ্যাডেড এরিয়ায়
গত বছর জুলাইয়ে শহরজুড়ে পথকুকুরের টিকাকরণ এবং নির্বীজকরণের ব্যবস্থা করেছিল কলকাতা পুরসভা। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত মাত্র ৩০ হাজার পথকুকুরের টিকাকরণ করা সম্ভব হয়েছে। নির্বীজকরণ করা হয়েছে মাত্র চার হাজার পথকুকুরের। এই পরিস্থিতিতে শহরে পথকুকুরের সংখ্যা কেন বাড়তে দেওয়া যাবে না, তা সাধারণ মানুষকে বোঝাতে প্রচার কর্মসূচি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা।

Kolkata Municipal Corporation Tax : ফেলে রাখা জমি: পুরকর না-মেটালে বাজেয়াপ্ত হবে
এ বিষয়ে কাউন্সিলরদের সাহায্য চাওয়ার কথা আধিকারিকদের জানিয়েছেন পুর কমিশনার বিনোদ কুমার। পুরসভার পদক্ষেপ প্রসঙ্গে শহরের এক পশুপ্রেমী সংগঠনের সদস্য বিপাশা চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রত্যেকে কুকুর ভালোবাসে এমনটা নয়। তা হলে এতো কুকুর মারা যেত না। তাই নির্বীজকরণ জরুরি। কারণ, কুকুরের সংখ্যা কমলে ওদের খাবারের সমস্যাও মিটবে। ফলে ওরা ভালোভাবে বাঁচতে পারবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version