২৫ অগাস্ট জন্মদিন। তার আগেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল বড়িশা স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সৌরনীল সরকারের। গুরুতর আহত তাঁর বাবাও। ঘটনাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হয়ে বেহালা চৌরাস্তা এলাকা। উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়িতে, বাইকে আগুন লাগিয়ে দেয়। ভাঙচুর চালানো হয় সরকারি বাসেও।
খবরটি শোনার পর থেকেই কথা বলার অবস্থায় নেই নিহত খুদে সৌরনীল সরকারের মা। বিদ্যাসাগরের হাসপাতালে মর্গে পড়ে সাত বছরের খুদের নিথর দেহ। বাইরে ছেলের রক্তাক্ত বইয়ের ব্যাগ আঁকড়ে বসে প্রলাপ বকছেন মা। এখনও মানতে পারছেন না ছোট্ট সোনাইকে আর ফিরে পাবেন না। বাবা সরোজ কুমারও এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ারে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি। জানা গিয়েছে, লরির ধাক্কায় তাঁর ফিমার বোন গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, এদিন সকালে ছেলেকে স্কুলে পৌঁছনোর জন্য রাস্তা পেরোচ্ছিলেন সরোজ কুমার। সেসময় একটি মাটি বোঝাই ট্রাক সিগন্যাল ভেঙে বেপরোয়া গতিতে যাওয়ার সময় ধাক্কা মারে সৌরনীল সরকার ও তার বাবা সরোজ কুমার সরকারকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সৌরনীলের। তার বাবাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের সেলও ফাটানো হয়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। তিনি জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যতটা কঠোর হওয়ার দরকার ছিল ততটাই হয়েছে।
উত্তেজিত অভিভাবকদের দাবি, সকালে কোনও পুলিশ থাকে না। পুলিশ লরি-ট্রাক থেকে টাকা তোলায় ব্যস্ত থাকে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। বারবার বলার পরেও স্কুলের সামনে কোনও ট্রাফিক দেওয়া হয় না, বলে অভিযোগ স্কুল কর্তৃপক্ষের। অথচ সামনেই যে বেসরকারি স্কুলগুলি আছে সেখানে পুলিশ থাকে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সংবাদমাধ্যমের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বলেন, ‘সকালে স্কুলে ঢোকার পরই খবর পেয়ে ছুটে গিয়ে দেখলাম আমাদের স্কুলের বাচ্চাটাকে মেরে দিয়ে চলে গিয়েছে। এই পুরো ঘটনার জন্য পুলিশ দায়ী। আমার স্কুলে রোজ ৯০০-১০০০ বাচ্চা আসে, এই রাস্তার মোড়ে কোনও পুলিশ থাকে না। বারবার বলেও কোনও লাভ হয়নি। এখানে গরিব ঘরের বাচ্চারা আসে, তাই কোনও নজর নেই।’ পুরো ঘটনার জন্য পুলিশকে দুষলেন সৌরনীলের হেডমাস্টার।