বিয়ের পরে স্ত্রীকে সার্ভে পার্কের বাড়িতে বৃদ্ধা মায়ের কাছে রেখে মুম্বইয়ে কর্মস্থলে চলে যান তিনি। এ সবের পরে দিন কয়েক আগে মুম্বই থেকে ঘুরিয়ে স্ত্রীকে কলকাতায় নিয়ে আসেন স্বামী। তার পরেই স্ত্রীর সম্পর্কে নানা অভিযোগ জানাতে থাকেন তিনি। এক সময়ে মেন্টাল প্রবলেমের অভিযোগ তুলে ভর্তি করে দেন একটি মানসিক হাসপাতালে। দু’মাস হল সেখানেই ভর্তি তরুণী স্ত্রী।
এই পরিস্থিতিতে বৌদিকে বাড়ি ফেরাতে দাদার কাছে অনুরোধ জানান তরুণীর ননদ। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। শেষে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বোন। তাঁর বক্তব্য — মানসিক ভাবে অসুস্থ না-হওয়া সত্ত্বেও বৌদিকে দিনের পর দিন হাসপাতালে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে। এর প্রতিকারে আদালতের হস্তক্ষেপ চান তিনি। তাঁর বৌদি নিয়মিত ডায়েরি লিখতেন। ননদ সেই ডায়েরি পড়ে মনে করেছেন, বৌদির উপরে মানসিক ভাবে অত্যাচার করতেন দাদা।
টালিগঞ্জ এলাকায় স্ত্রীর পারিবারিক একটি সম্পত্তি দখল করতেই স্বামী তাঁকে মানসিক ভারসাম্যহীন প্রমাণের চেষ্টা করছেন বলে মামলায় অভিযোগ। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন অভিযুক্তের আইনজীবী। বেশ কিছুদিন ধরে চলা এই মামলায় গত সপ্তাহে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত যাবতীয় মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখেন। তিনি জানান, তরুণীকে বারাসতের ওই অ্যাসাইলাম থেকে এমআর বাঙুর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে হবে।
খরচ বহন করতে হবে স্বামীকে। স্থানীয় থানার ওসি এই স্থানান্তরের বিষয়টি দেখবেন। গত সপ্তাহে এই মামলা চলাকালীন স্বামীর আইনজীবী দাবি করেন, স্ত্রীকে সুস্থ করার যাবতীয় দায়দায়িত্ব নিয়েছেন ওই ব্যক্তি। তিনিও চান যে স্ত্রী সুস্থ হয়ে উঠুন। এরই প্রেক্ষিতে স্ত্রীর চিকিৎসার খরচ বহন করায় এ নিয়ে বক্তব্য জানানোর অধিকার স্বামীরই বেশি বলে দাবি করায় ‘পণ্য বা সম্পত্তি নন’ বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি সেনগুপ্ত।
মামলাকারীর আইনজীবী সূর্যনীল দাসের বক্তব্য, ওই তরুণীকে মে মাসে মুম্বই থেকে ফিরিয়ে এনে বারাসতের কাছে অ্যাসাইলামে ভর্তি করে দু’দিন পরেই নিজেই সেখানে ফিরে যান স্বামী। আর তরুণী ভর্তি আছেন হাসপাতালে। পরবর্তী শুনানিতে দু’পক্ষকে নিজেদের বক্তব্য হলফনামার আকারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।