আতঙ্কে কেউ কেউ কাঁপছেন, কেউ ভয়ে হাউ হাউ করে কেঁদেই চলেছেন। চোখে মুখে জল দিয়ে কারও কারও জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করছেন সহকর্মীরা। দোকানে ক্রেতাকে হাসিমুখে সুন্দর সুন্দর গয়নার সম্ভার দেখানো সেনকোর মহিলা কর্মীরা চোখের সামনে তাণ্ডব দেখে একেবারে ভেঙে পড়েছেন। মিনিট কয়েক আগে মৃত্যুকে দেখেছেন চোখের সামনে।

দিনেদুপুরে সেনকো গোল্ডের দুই দোকানে গুলি চালিয়ে দুঃসাহসিক ডাকাতি। নদিয়ার রাণাঘাট ও পুরুলিয়ার সেনকো গোল্ডের শোরুমে ঘটেছে এই ঘটনা। ডাকাতির শিকার হয়ে আতঙ্কে প্রায় জ্ঞান হারানোর উপক্রম কর্মীদের। ক্যাশে থাকা সহকর্মীকে চোখের সামনে মার খেতে দেখেছেন কেউ, কারও রগে বন্দুক ধরে বার করে নেওয়া হয়েছে দোকানের সমস্ত গয়না। দোকানের জিনিসের সঙ্গে সঙ্গে কারও কারও মোবাইলও কেড়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। রুদ্ধশ্বাস ২০-২৫ মিনিটে বহুবার সকলে অনুভব করেছেন এখানেই বোধহয় সব শেষ। জীবন মৃত্যুর ভয় কাটতেই ভবিষ্যত নিয়ে আতঙ্কে কথাই বলতে পারছেন না কর্মীরা।
Senco Gold & Diamonds: টার্গেট সেনকো গোল্ড, দুই জেলায় শোরুম থেকে লুঠ কোটি কোটি টাকার গয়না
দুপুরে তখন বাইরে গনগনে রোদ। দোকানে সেসময় কোনও ক্রেতা ছিল না। নির্জন সময়ে তখন আচমকা দোকানের ভিতর ঢুকে এলেন দুজন। ক্রেতাকে আসতে দেখে সবে উদ্যোগী হয়ে মহিলা কর্মীরা সবে এগিয়ে যেতে যাবেন, এমন সময়ে হুড়মুড় করে ভারি কাচের দরজা ঠেলে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ঢুকে এলেন কয়েকজন। এসেই বন্দুক উঁচিয়ে হিন্দিতে হুমকি। ‘কথা না শুনে গলার আওয়াজ বার করলে একেবারে খুলি উড়িয়ে দেওয়া হবে।’ রীতিমতো গলাধাক্কা দিয়ে, মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বের করে নেওয়া হয় দোকানের সমস্ত গয়না।
Bardhaman Shootout : ব্যারাকপুরের ছায়া গাংপুরে! দিনে দুপুরে সোনা দোকানিকে লক্ষ্য করে গুলি, আতঙ্ক

রাণাঘাটের মতোই ভর দুপুরে পুরুরিয়া শহরের নামোপাড়া এলাকায় সেনকো গোল্ডের শোরুমে হানা দেয় ডাকাতরা। নিরাপত্তারক্ষীদের বেঁধে রেখে ডাকাতি করে চমপ্ট দেয় ডাকাতরা। প্রায় আটজনের ডাকাত দল ঢোকে সোনার গহনার দোকানে। আনুমানিক আট কোটি টাকার সোনা ও হিরে গহনা নিয়ে চম্পট দেয় তারা। সঙ্গে নিয়ে যায় সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ড ডিস্কও। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
Ranaghat Robbery Case : পুলিশের সঙ্গে ডাকাত দলের গুলির লড়াই, দেখুন হাড়হিম করা ভিডিয়ো

জানা গিয়েছে, পুরুলিয়ার নামপাড়া এলাকায় আট জনের ডাকাত দল খদ্দের সেজে দোকানে ঢোকে। তারপর গয়নার দোকানে প্রবেশের পর স্বমূর্তি ধারণ করে তারা। গোটা দোকানে প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে লুঠপাট চালায় । তারপর গুলি চালাতে চালাতে বাইকে চেপে চম্পট দেয়। ঘটনার পর জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারা সেখানে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। দুপুর নাগাদ অভিজাত সোনার দোকানে ডাকাত দল খদ্দের হিসেবে ঢোকার পর নিরাপত্তারক্ষী ও কর্মচারীদের বেঁধে রেখে আট কোটি টাকা সোনা ও হীরের গহনা নিয়ে চম্পট দেয় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য। ইতিমধ্যেই পুরুলিয়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে তদন্ত শুরু করেছে। রাণাঘাটের ঘটনায় চারজন গ্রেফতার হলেও পুরুলিয়ায় এখনও অধরা দুষ্কৃতীরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version