এই সময়, ভাঙড়: প্রায় ১৭ বছর পরেও নিজস্ব জমি পেল না অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। কখনও গাছ তলায় আবার কখনও অন্যের বাড়িতে চলছে পঠনপাঠন। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে খুদে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করতে হচ্ছে। এমনকী পড়ুয়ারা আকাশের নীচে বসেই মিড ডে মিলের খাবার খাচ্ছে। ওই কেন্দ্রের সহায়িকা কর্মীরা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে একাধিকবার বিষয়টি জানিয়েছেন।

Indian Railways : স্টেশন সংলগ্ন রাস্তায় যানজট কমাতে বড় সিদ্ধান্ত, রাজ্যে ৭টি নতুন ব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা
কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। শেষে গ্রামের এক ব্যক্তি তাঁর বাড়ির বারান্দায় পড়ুয়াদের পড়াশোনা করার জন্য জায়গা দেন। এখন সেখানেই চলছে পঠনপাঠন। এমনই অবস্থা ভাঙড় ২ ব্লকের পোলেরহাট ১ পঞ্চায়েতের নওয়াবাদ গ্রামের ১৪৬ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের। অভিযোগ, আগে যে জায়গায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ছিল তা সংস্কার করতে দিচ্ছেন না গ্রামেরই এক বাসিন্দা। তাঁর দাবি, ওটা তাঁর জায়গা।

Indian Railways: ‘মমতার চালু করা প্রজেক্টে অর্থ বরাদ্দ করেনি BJP’, রেলমন্ত্রীর চিঠির পালটা আক্রমণ মন্ত্রী স্নেহাশিসের
ভাঙড় ২-এর বিডিও কার্তিক চন্দ্র রায় বলেন, ‘জমি সংক্রান্ত কোনও সমস্যার কারণে কেন্দ্রটির সংস্কারের কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে আছে বলে শুনেছি। সিডিপিওকে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলেছি। রিপোর্ট পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ ২০০৬ সালে সরকারি খাস জমিতে প্রায় ১৭ বছর আগে বাম জমানায় পোলেরহাট-১ পঞ্চায়েতের নওয়াবাদ গ্রামে তৈরি করা হয়েছিল ১৪৬ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি। সেই সময় টিনের চাল দেওয়া ইটের দেওয়াল দেওয়া পাকা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি তৈরি করা হয়।

Hooghly News : বছর ঘুরতেই খালের গর্ভে নবনির্মিত রাস্তা, বৃষ্টির দোহাই স্থানীয় পঞ্চায়েতের
জানলায় গ্রিল, দরজা সবই করা হয়েছিল। শুধু সিমেন্টের প্লাস্টার, রং করা হয়নি। উম্পুনের সময় ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের টিনের চাল উড়ে যায়। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি সংস্কারের জন্য ৩ লক্ষ ৪৯ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু সংস্কারের কাজ করতে গেলে বাধা দেন স্থানীয় বাসিন্দা তোয়েব মোল্লা। ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পিছনে তাঁর বাড়ি। তোয়েবের দাবি, গায়ের জোরে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি তাঁর জায়গায় তৈরি করা হয়েছিল। ফলে তাঁর জায়গায় তৈরি হওয়া ওই কেন্দ্র কোনও ভাবেই সংস্কার করা যাবে না।

Asansol News : ৬ বছরে ৪ জন ডিআরএম, তবুও হলো না আন্ডারপাস
এ দিকে, সংস্কারের অভাবে পড়ে থাকা ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি আস্তে আস্তে পোড়ো বাড়িতে পরিণত হচ্ছে। ওই কেন্দ্র থেকে রাতে খুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইট, দরজা, জানলা। এই নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে এলাকার মানুষের। শিশুদের কথা ভেবে নতুন করে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরির দাবি জানাচ্ছেন এলাকার মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, স্থানীয় পঞ্চায়েত ও প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অবিলম্বে যাতে ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি তৈরি হয় তার জন্য এলাকায় পোস্টার পড়েছে।

AMRUT Scheme : জলপ্রকল্পে কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ, বাঁশবেড়িয়া পুরসভার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা
ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী শিপ্রা নাথ বলেন, ‘সরকারি ভাবে আমাদের কেন্দ্রটি তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। ওই কেন্দ্রের টিনের চাল ভেঙে যাওয়ার পর থেকে স্থানীয় এক বাসিন্দা সংস্কারের কাজ করতে দিচ্ছেন না। ফলে ছোট ছোট পড়ুয়াদের নিয়ে আমরা সমস্যায় পড়েছি।’ যার বাড়িতে বর্তমানে ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি চলছে, সেই বাড়ির মালিক আলাউদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটির বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

VIP Road : VIP Road-এ মরণ ফাঁদ! টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ স্থানীয়দের, যানজটে নাকাল নিত্যযাত্রীরা
ছোটদের খোলা আকাশের নীচে ক্লাস করতে হচ্ছিল। বাধ্য হয়ে আমি আমার বাড়িতে ক্লাস করার সুযোগ করে দিয়েছি।’ ওই এলাকার তৃণমূল নেতা তথা স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যর ছেলে আব্দুল মোমিন বলেন, ‘আমরা চাই অবিলম্বে ওই কেন্দ্রটি সংস্কার করে পুনরায় চালু করতে। কিন্তু স্থানীয় এক বাসিন্দা ওই কাজ করতে সমস্যা তৈরি করছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version