এই সময়: চিরাচরিত পদ্ধতির বাইরে গিয়ে নতুন পদ্ধতি হাতিয়ার করতে শুরু করেছে প্রতারকরা। গ্রাহকদের আধারের সঙ্গে যুক্ত বায়োমেট্রিক তথ্য হাতিয়ে নিয়ে তুলে নেওয়া হচ্ছে টাকা। এক বেসরকারি ব্যাঙ্কের সিকিওরিটি সিস্টেম বিভাগের পদস্থ কর্তা বলেন, ‘আধার ভিত্তিক পেমেন্ট পরিষেবা (আধার এনাবেলড পেমেন্ট সার্ভিস) সক্রিয় না করা থাকলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চোট যাওয়ার কোনও ভয় নেই।’ তবে, জালিয়াতির ঘটনার ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের বিজনেস করেসপন্ডেন্টদের জড়িত থাকার সম্ভাবনা তিনি উড়িয়ে দেননি।

Cyber Crime : এবার আধারের বায়োমেট্রিক ক্লোন করে অ্যাকাউন্টে হানা, হ্যাকারদের শিকার দুর্গাপুরের ব্যবসায়ী
প্রত্যন্ত এলাকা, যেখানে এটিএম বা ব্যাঙ্কের শাখার সুবিধা নেই, সেখানে বিজনেস করেসপন্ডেন্টদের উপরেই নির্ভর করতে হয় গ্রাহকদের। বিজনেস করেসপন্ডেন্টরা বায়োমেট্রিক তথ্য যাচাইয়ের যন্ত্রে গ্রাহকের আঙুলের ছাপ নেওয়ার পর টাকা তুলে দেন। সে ক্ষেত্রে বিজনেস করেসপন্ডেন্টদের যোগসাজশ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই তাঁর মত। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের (পিএনবি) এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘এ ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলির বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা রাখা দরকার। একই জায়গা থেকে বারবার ট্রানজাকশন রিকোয়েস্ট এলে যেখানে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট রয়েছে সেই ব্যাঙ্ককে তার উপর নজর রাখতে হবে।’

Cyber Crime : সিপিএম নেতার অ্যাকাউন্টে হানা, হাতিয়ার সেই আধার বায়োমেট্রিক
স্টেট ব্যাঙ্কের এক কর্তার কথায়, ‘প্রোফাইলের ভিত্তিতে গ্রাহকদের দৈনিক, সাপ্তাহিক এমনকী মাসিক লেনদেনের সীমা বেঁধে দেওয়া যেতে পারে ব্যাঙ্কের তরফে।’ তবে, আধার এনঅ্যাবলড পেমেন্ট সার্ভিস ব্যবহার করে কোনও প্রতারণার ঘটনা ঘটলে যে গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চুরি গিয়েছে তা ফেরত পাওয়া যাবে।

Cyber Crime : বায়োমেট্রিক তথ্য চুরি, ফাঁদে কলকাতার বাসিন্দাও
অ্যাকাউন্ট খোলার সময় গ্রাহকদের অনেক সময় ফর্মের বিভিন্ন জায়গায় টিক মারতে বলে থাকেন সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের কর্মী। অনেক সময় আধার এনঅ্যাবলড পেমেন্ট সার্ভিসের প্রয়োজন না থাকলেও সেখানে টিক মেরে দেন গ্রাহকরা। কারণ, ফর্মের সবকিছু পড়া হয়ে ওঠে না তাঁদের। ব্যাঙ্কগুলির এ দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন রাজ্যে অল ইন্ডিয়া ন্যাশনালাইজড ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশনের সম্পাদক সঞ্জয় দাস।
তিনি বলেন, ‘এখন ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার অধিকাংশ কাজই চুক্তির ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগ করে তাঁদের দিয়ে করানো হচ্ছে। এর ফলে প্রতারণার সম্ভাবনাও কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে।’

Bank Frauds : গচ্ছিত অর্থ ব্যাঙ্কে রেখেও পাচ্ছেন না গ্রাহকরা, প্রতারণার অভিযোগে হুলস্থুল বনগাঁয়
ব্যাঙ্কগুলির তরফে গ্রাহক সচেতনতা বাড়ানোর কর্মসূচি নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন ইউএফবিইউ-র রাজেন নাগর। তাঁর কথায়, ‘আর্থিক লেনদেনে ডিজিটাল ব্যবস্থা ভালো। তবে, গ্রাহকদের শিক্ষিত করে তোলার উপর সরকারের জোর দেওয়া আরও বেশি দরকার।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version