নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সম্প্রতি নিজেকে শিক্ষক পদে ‘যোগ্য’ বলে দাবি করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ২০১৪-র টেট পরীক্ষার্থী এক চাকরিপ্রার্থী। আদালতে করা আবেদনে তিনি জানিয়েছিলেন, ২০১৪-র টেট প্রশ্নপত্রে ছ’টি প্রশ্ন ভুল ছিল। সেই নম্বর পেলে তিনি চাকরি পেতেন। চাকরিপ্রার্থীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে অ্যাপ্টিটিউট টেস্ট ও ভিডিয়োগ্রাফি করে তাঁর ইন্টারভিউ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই ইন্টারভিউয়ের ভিডিয়ো এদিন আদালতে চালাতেই বিস্মিত হয়ে যান বিচারপতি।

Justice Abhijit Ganguly : ‘গরিবের টাকা নিয়ে ছেলেখেলা…’, রাজ্যকে ৫০ লাখ জরিমানা ক্ষুব্ধ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের
ভিডিয়ো চালিয়ে দেখার পর বিস্মিত বিচারপতি ওই চাকরিপ্রার্থীকে প্রশ্ন করেন, ‘এই যোগ্যতা নিয়ে আপনি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে যাবেন?’ এরপরই তাঁর আবেদন বাতিল করে দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীর উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, ‘আপনার আবেদন খারিজ করতে বাধ্য হচ্ছি।’

Justice Abhijit Gangopadhyay : দু’পা হারানো কলেজ ছাত্রীকে দেখতে হাসপাতালে গিয়ে কেঁদে ফেললেন জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়
চাকরিপ্রার্থীর ইন্টারভিউর ভিডিয়োতে বিচারপতি দেখেন, ওই প্রার্থী ব্ল্যাকবোর্ডে লিখেছেন, ‘আমরা চাষ করী আনন্দে।’ চাকরিপ্রার্থী এই লাইনে বানানে বড় গলদ রয়েছে। তিনি ‘করি’-র বদলে ‘করী’ লিখেছিলেন। এই দেখে হতবাক বিচারপতি চাকরিপ্রার্থীকে বলেন, ‘দুর্গা বানান বলুন তো!’ ওই মামলাকারী মৌখিকভাবে বানান করেন বলেন ‘দূর্গা’ (সঠিক বানান দুর্গা)। চাকরিরপ্রার্থীর ভুল বানান শুনে বিচারপতি বলেন, ‘আপনি যে বানান বললেন ওটা ভুল। এই সাধারণ বানান না জানলে কী ভাবে শিক্ষক হবেন? ‘করি বানানে ভুল হল কেন?”

বিচারপতির প্রশ্নে মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীর সাফাই, ‘ধর্মাবতার, আমি নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলাম… অনেকদিন আগে পড়েছি তাই ভুলে গিয়েছি।’ জবাবে বিচারপতি বলেন, ‘আমিও তো বহু আগে পড়াশোনা করেছি। আমারও তো তবে ভুলে যাওয়ার কথা। আমি আর ভিডিয়ো চালিয়ে দেখব না। আমি সবটা বুঝে গিয়েছি।’ মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীকে বিচারপতি বলেন, ‘আবেদন খারিজ করতে বাধ্য হলাম। এই বিদ্যে নিয়ে স্কুলে পড়ানোর যোগ্যতা নেই আপনার। টাকা দিয়ে আপনার থেকে কম যোগ্যতার অনেকেই হয়তো চাকরি পেয়েছে। কিন্তু আপনিও স্কুলে পড়ানোর জন্য যোগ্য নন।’

Sukanya Mondal : চারমাস পিছোল সুকন্যার জামিন-আর্জির শুনানি
এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে একাধিক একাধিক মামলার শুনানি ছিল। নির্দেশ কার্যকর না করার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারিকে ৫ হাজার টাকার জরিমানা করেছেন বিচারপতি। অন্যদিকে আলিপুরদুয়ারের একটি সমিতিতে ৫০ কোটি টাকা দুর্নীতি মামলায় তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে হস্তান্তরিত না করার জন্য রাজ্য সরকারকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version