সন্দীপ প্রামাণিক: স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। NKDA-এর চেয়ারম্যান হওয়ার পরই আর তারপরেই শোভনের সমর্থনে পড়ল পোস্টার। তাও আবার খোদ পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের বিধানসভা এলাকায়। বেহালা পশ্চিমে অজন্তা সিনেমা হলের সামনে পড়ল শোভনের নামে পোস্টার। সেই পোস্টারে মুখ্যমন্ত্রী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যাকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। বেহালা নাগরিক মঞ্চের তরফ থেকে এই পোস্টার দেওয়া হয়েছে।
তৃণমূলের অন্দরে কি তাহলে বদলাচ্ছে সমীকরণ? পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের নিষ্ক্রিয়তা এবং দীর্ঘদিন জেলজীবন ও বিধায়ক হিসেবে কাজ না করার জন্য ওই কেন্দ্রেই এগিয়ে দিচ্ছে শোভন চট্টোপাধ্য়ায়কে? সম্প্রতি দার্জিলিঙে মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতের পর বড় দায়িত্ব পেয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। নিউটাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত হওয়ার পরই কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের সমর্থনে পড়ল পোস্টার।
আর তারপরেই তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক গুঞ্জন। বেহালা পশ্চিমে ২৫ বছর ধরে বিধায়ক পদে থেকেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে শিক্ষা দুর্নীতি মামলায় জড়িয়ে গিয়ে এখন তিনি জেলবন্দি।
অবশ্য, পার্থর জেলমুক্তির সম্ভবনাও যে কম, এমনটা নয়। কিন্তু জেলমুক্তি হলেও কি ওই কেন্দ্রের জন্য টিকিট পাবেন পার্থ? সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। গত কয়েকবছরে তাঁর নামের উপর যে ‘লাল কালির’ দাগ পড়েছে, তা কি এত সহজে মুছে দেওয়া সম্ভব? একাংশের মতে, সেই কথা ভাবাচ্ছে ঘাসফুল শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্বদেরও। আর ততই জোড়াল হচ্ছে শোভনের দলে ফেরা ও পার্থর কেন্দ্র থেকে টিকিট পাওয়ার সম্ভবনা।
রত্না চট্টোপাধ্য়ায়ের প্রতিক্রিয়া: এই বিষয়ে রত্না চট্টোপাধ্য়ায় বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই ছোট্ট পোস্টার ঘিরে এত মাতামাতির কিছু নেই। বেহালাবাসী যে, খুব খুশি বা ফুল নিয়ে ওঁর বাড়িতে গিয়েছে- একদমই তেমন নয়। পুরনো এক সিপিএম কর্মী, পরে তৃণমূল জয়েন করে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের ঘনিষ্ট ছিলেন। পার্থ জেলে যাওয়ার পর, সেই কর্মী শোভনের ঘনিষ্ট হয়ে ওঠে। সেই এই পোস্টার দিয়েছে। তবে শোভন বাবু বেহালা পশ্চিমে আসলে তাঁকে স্বাগত। আমরা তৃণমূল কর্মী হিসেবে সবরকম সহযোগিতা করব। স্ত্রী হিসেবে আমি বলব- ৮ বছর যেভাবে উনি সময় নষ্ট করেছেন, তা না করে উনি যদি সক্রিয় রাজনীতিতে ফেরেন তাহলে স্বাগত। উনি দলে ফিরেছেন এমনটা নয়। শুনেছি এই রকম একটা পোস্টার লাগানো হয়েছে। হয়তো শুভাকাঙ্খীরা লাগিয়েছেন। তবে বেহালায় এখনও শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ের তৃণমূলে কামব্যাক নিয়ে কোনও উচ্ছাস তৈরি হয়নি। আর উনি যে দিন এনকেডিএ-র চেয়ারম্য়ান হলেন, আমি তো সেই দিনই বললাম, একটা কাজের মানুষ অকারণে ৮টা বছর ঘরে বসে নষ্ট করে দিলেন। উনি যদি আবার দলে ফেরেন, তা হলে আমি নিশ্চয়ই স্বাগত জানাব।
আরও পড়ুন: Gold Rate Today: কিনতে চাইলে এখনই কিনে নিন! উত্সবের মরসুমে আবারও কমল সোনার দাম, সঙ্গী রুপোও…
কী বলছে রাজনৈতিক মহল?
টিকিট বা রাজনীতির কচকচানি নয়। বেহালা পশ্চিমের ওই অংশকে শোভনের অতীতের সঙ্গে জুড়ে দিতে মরিয়া তৃণমূল শিবির। এদিন দলের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রার্থী কে, কোথায় হবেন, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। আর যেখানে পোস্টার পড়েছে অর্থাৎ ১৩০ ও ১৩১, ১৩২ নম্বর ওর্য়াড। বলে রাখা প্রয়োজন, ওই ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আদি বাড়ি। এই ওয়ার্ড থেকেই তিনি কাউন্সিলর হয়েছেন, মেয়র হয়েছেন, এখানকার মানুষের সঙ্গে শোভনদার একটি আত্মিকতা রয়েছে।’
অবশ্য বেহালা পশ্চিম থেকে তৃণমূলে কে প্রার্থী হবে, কে হবে না, সেই নিয়ে তাঁদের দলের কিছু যায় আসে না বলেই মত বিজেপি নেতা সজল ঘোষের। তাঁর কথায়, ‘এই পোস্টার, চেয়ারম্য়ান পদ আসলে শোভন নয়, বৈশাখীদির জয়।’
বিজেপি নেতা দেবজিত্ সরকার বলেন- ‘এগুলো তৃণমূলের নিজেদের আন্ডারস্ট্যান্ডিং। লোকের চোখে ধুলো দেওয়ার কৌশল। এসবে মানুষ বিশ্বাস করবে না’।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)