বেলুড় মঠের কুমারী পুজোর ইতিহাস
স্বয়ং স্বামী বিবেকানন্দ বেলুড় মঠে কুমারী পুজোর সূচনা করেন। সেই সময় বেলুড় মঠে উপস্থিত ছিলেন মা সারদা দেবী। স্বামীজি সারদা মায়ের উপস্থিতিতে ৯ জন বালিকাকে কুমারীরূপে পুজো করেন। কুমারী পায়ে পুষ্পাঞ্জলী অর্পণ করেন এবং পুজোর শেষে তাদের প্রণামী দেন। তারপর থেকে আজও বেলুড় মঠে সেই একই ঐতিহ্য ও প্রথা মেনে অষ্টমীর দিন পুজো করা হয় কুমারীদের। মূলত ৫ থেকে ৭ বছরের মধ্যে কুমারীদের দেবীজ্ঞানে পুজো করা হয়। বেনারসি শাড়ি ও নানবিধ গয়নায় সাজিয়ে দেবী রূপে পুজো করা হয় ছোট্ট কুমারীকে।
শোনা যায়, একবার নাকি কাশ্মীরে ভ্রমণকালে মুসলমান এক মাঝির শিশুকন্যাকেও পুজো করেন তিনি। আজও শ্রী শ্রী মায়ের নামেই এই পুজোর সংকল্প করা হয়। তার নেপথ্যে প্রদান কারণ হল যেহেতু সন্ন্যাসীরা সংকল্প করে কোনও পুজো না বৈদিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করার অধিকারী নন, তাই সারদা দেবীর নামেই করা হয় সংকল্প।
পুজোর জন্য কী ভাবে বেছে নেওয়া হয় কুমারীদের?
এই প্রসঙ্গে হুগলির বাঁশবেড়িয়ার শ্রী রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ আশ্রমের মহারাজ স্বামী প্রেমাত্মানন্দ জানান, ব্রাহ্মণ পরিবার থেকে বেছে নেওয়া হয় কুমারীদের। কেউ যদি নিজের কন্যাকে পুজোর কুমারী করতে চান, তাহলে তাঁকে মঠের সংশ্লিষ্ট দফতরে দায়িত্বপ্রাপ্ত মহারাজদের সঙ্গে কথা বলতে হবে।
কুমারী পুজোর নির্ঘণ্ট
এই বছরের পুজোর নির্ঘণ্টও ইতিমধ্যেই প্রকাশ করে গিয়েছে বেলুড় মঠ। জানানো হয়েছে কুমারী পুজোর সময়ও। মহাষ্টমীর দিন সকাল ৯টায় শুরু হবে কুমারী পুজো, আর সন্ধিপুজো চলবে সন্ধ্যা ৭টা ৩৬ মিনিট থেকে রাত্রি ৮টা ২৪ মিনিট পর্যন্ত। ভোগারতির পর হবে পুষ্পাঞ্চলি। প্রতিদিনই সন্ধ্যায় শ্রী শ্রী ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের আরতির পর হবে মা দুর্গার আরতি। প্রতিবারের মতো এবারেও প্রচুর মানুষ কুমারী পুজো দেখতে ভিড় করবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।