কামদুনিকাণ্ডে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন গ্রামবাসীরা। সুপ্রিম কোর্টও কামদুনির প্রতিবাদীদের আবদেনে সেই অর্থে সাড়া দেয়নি। বেকসুর খালাসদের উপর একাধিক শর্ত আরোপ করেছে শীর্ষ আদালত। ষষ্ঠীর সকালে কামদুনিতে নেই কোনও উৎসবের আমেজ। দেবীর বোধনের দিন সকালে ফের একবার কামদুনি মোড়ে জড়ো হলেন প্রতিবাদী মৌসুমী, টুম্পা, মাস্টারমশাইসহ গ্রামের বাসিন্দারা। সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের তাঁরা প্রতিবাদে আহ্বান জানিয়েছেন। শর্ত একটাই, কোনও দলীয় প্রতীক ছাড়াই প্রতিবাদে সামিল হতে হবে।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে কামদুনিতে মিছিল করেছে বিজেপি মহিলা মোর্চা। তবে বিজেপি সেই মিছিলে কামদুনির কোনও প্রতিবাদীদের দেখা যায়নি। কামদুনি প্রতিবাদী মঞ্চ চায় সকলে দলীয় রঙ ছেড়ে তাদের আন্দোলনে সামিল হোন। শাসকদল তৃণমূলকেও প্রতিবাদে আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

মাঝে কেটে গিয়ে গিয়েছে ১০ বছর। ‘ন্যায্য বিচার’ চায় কামদুনি। হাইকোর্টের রায়ে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। ন্যায্য বিচার পেতে কামদুনির প্রতিবাদীরা পৌছে গিয়েছিলেন রাজধানী দিল্লিতে। তবে এখনও গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনার ন্যায্য বিচার পাওয়া যায়নি। কিন্তু বিচারের দাবিতে, আরও ১০ বছর লড়াই চালিয়ে যেতে চায় কামদুনি। ন্যায় বিচার আদায় করে ছাড়বে, এমনই জেদ কামদুনির।

Kamduni Case : কামদুনিকাণ্ডে হাইকোর্টের রায়ে মুক্তিপ্রাপ্তদের উপর শর্ত আরোপ সুপ্রিম কোর্টের
কামদুনির প্রতিবাদী মৌসুমী কয়াল বলেন, ‘আমরা তো সন্তানের মা। সেই কারণে ষষ্ঠীর অঞ্জলি দিতে হয়েছে। মনে শান্তি নেই, কিন্তু সন্তানের মঙ্গলকামনা করতেই হবে। কিন্তু পুজোয় আনন্দ বা মজা করব সেই শান্তি মনে নেই। পুরনো শাড়ি পরে অঞ্জলি দিয়ে এলাম। হাইকোর্টের রায়ে মনের ভরসাটাই চলে গিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের উপর আমাদের ভরসা ছিল। কিন্তু দোষীদের শর্ত দেওয়া হল। সেই তো তারা রাস্তায় ঘুরে বেড়াবে। বিচার না পেলে মানুষ আইন হাতে তুলে নিয়ে বাধ্য হয়। আমরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে খুশি নই। আইনত দোষীদের শাস্তি না দিলে আমাদের শান্তি নেই। সুবিচারের আশায় আমাদের আজকে এই অবস্থান চলছে।’

কামদুনির আরও এক প্রতিবাদী টুম্পা কয়াল বলেন, ‘আমরা সব রাজনৈতিক দলকে প্রতিবাদে যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছি। তবে রাজনৈতিক পতাকা ছেড়ে দিয়ে তাদের আসতে বলা হয়েছে। মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককেও আসার জন্য বলেছি। আমরা চিন্তাভাবনা করেই আজ এখানে অবস্থান করছি। চিন্তাভাবনা করেই আমাদের এই সিদ্ধান্ত। দীর্ঘ ১০ বছরের আন্দোলন। রাজ্য সরকারের দেখানো পথে হেঁটেও বিচার পাইনি।’

এদিন কামদুনির প্রতিবাদে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। তিনি বলেন, ‘রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে আমরা কামদুনিকে সমর্থন করব। বিরোধী দলনেতা আমাদের এখানে পাঠিয়েছেন। আমরা বিচার চাই, সবরকমভাবে সাহায্য করব।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version