এবার তা বাড়িয়ে ১২৫ ডেসিবেল করা হয়েছে। এই মাত্রায় সব ধরনের শব্দবাজিই পাস করে যাবে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। ফলে, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ প্যাকেটে কেন্দ্রীয় সংস্থা ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট (নিরি) লোগো এবং কিউআর কোড স্ক্যানার রয়েছে, এমন বাজি কেনার কথা বললেও শহরে ভুয়ো কিউ আর কোডকে হাতিয়ার করে নিষিদ্ধ বাজির রমরমা যে এবার আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন পরিবেশ কর্মীরা।
তাছাড়া, গত দুমাসে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ শব্দবাজি উদ্ধার সেই আশঙ্কাকে আরও জোরালো করেছে। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, রাজ্যে সবুজ বাজি তৈরির কারখানা নেই বললেই চলে। আর শিবকাশি-সহ ভিন রাজ্য থেকে ঢোকা বাজি যে পরিবেশবান্ধব, তা যাচাই করবে কে? দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তারাও মেনে নিচ্ছেন, সবুজ বাজি চিহ্নিত করার উপযুক্ত পরিকাঠামো তাদের হাতে নেই।
তবে, পশ্চিমবঙ্গ বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতি এবারই প্রথম নিষিদ্ধ বাজির মুচলেকা নিতে শুরু করেছে ব্যবসায়ীদের থেকে। ওই মুচলেকা অনুযায়ী, স্টলে শুধুমাত্র সবুজ বাজিই বিক্রি হবে। বাজির প্যাকেটে থাকবে কিউআর কোড, যা স্ক্যান করলে মিলবে সেই বাজি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য। এর বাইরে অন্য কোনও বাজি স্টলে থাকবে না।
কলকাতা পুলিশের এক কর্তার অবশ্য দাবি, শহরে মূলত দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং শিবকাশি থেকেই বাজি ঢোকে। সবুজ বাজির আড়ালে যাতে নিষিদ্ধ শব্দবাজি না ঢোকে সেজন্য সব গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পণ্যবাহী গাড়িগুলি চেকিং করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অফিসারদের কিউ আর কোডের বিষয়ে জানানো হয়েছে। কিন্তু, যে পরিমাণ বাজি স্টলে বা পণব্যাহী গাড়িতে থাকে, তাতে প্রতিটি প্যাকেট স্ক্যান করে দেখা সম্ভব নয় বলে দাবি পুলিশকর্তাদের।
পরিবেশ কর্মী তথা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন মুখ্য আইন আধিকারিক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় মনে করেন, ‘সবুজ বাজি চেনার জন্য পুলিশ থেকে বিক্রেতা— কারও কোনও প্রশিক্ষণ নেই। সবুজ বাজি তৈরি হয় এমন কারখানা এ রাজ্য নেই বললেই চলে। এই পরিস্থিতি শব্দবাজির মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়ার ফলে পরিবেশ বান্ধবে উপায়ে তৈরি হয়নি এমন অনেক বাজিই বাজারে ঢুকবে।’
তবে পরিবেশ দফতরের এক কর্তা রবিবার রাতে বলেন, ‘নিষিদ্ধ বাজির বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর কথা সব জেলার প্রশাসনকে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, মানুষ যাতে নিষিদ্ধ শব্দবাজি না কেনেন, সেজন্য চলবে প্রচারমূলক কর্মসূচি।’
বাজি কেনার ক্ষেত্রে কী সতর্কতা মানবেন
কিউ আর কোড অবশ্যই স্ক্যান করুন, স্ক্যানে নিরি স্বীকৃতি দেখালে তবেই বাজি কিনুন, পরিবেশবান্ধব বাজি ছাড়া কিনবেন না।
পরিবেশ বান্ধব বাজি
তারবাজি, তারাকাঠি, তুবড়ি, ফুলঝুড়ি, চড়কি, ফ্লাওয়ার পট, রংমশাল
নিষিদ্ধ শব্দবাজি
চকোলেট, দোদোমা, রকেট, টু-সাউন্ড, চরকা বাজি