কারও কাছে তিনি ‘অ্যাম্বুল্যান্স দাদা’। কারও কাছে বিপদে ত্রাতা। কারণ কেউ বিপদে পড়লে ঝাঁপিয়ে পড়াই তাঁর স্বভাব। আর এই সেবাব্রতের জন্য পেয়েছেন পদ্মশ্রী সম্মানও। সেই ‘অ্যাম্বুল্যান্স দাদা’ করিমুল হক এবার নিজেই অসুস্থ। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ‘বাইক অ্যাম্বুল্যান্স দাদা’ তথা পদ্মশ্রী করিমুল হক। তবে আগের তুলনায় বর্তমানে অনেকটাই সুস্থ রয়েছেন তিনি। আগামীদিনে তাঁর পেসমেকার বসানো হতে পারে বলে খবর। তবে আপাতত কয়েকদিন ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তিই থাকতে হবে তাঁকে।

সূত্রের খবর, ক্রান্তিতে একটি মেলা চলছে। আর সেই মেলাতেই একটি স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করেছেন করিমুল হক। তার জন্য গত কয়েকদিন ধরে চলেছে অক্লান্ত পরিশ্রম। ঘটনার দিনও ধলাবাড়িতে নিজের বাড়ি থেকে ওই মেলায় যাওয়ার প্রস্তুতিই নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন। শুরু হয় দরদর করে ঘাম। সঙ্গে থাকা চিকিৎসকরা তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে শিলিগুড়ির ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আপাতত সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন আপাতত তিনি বিপন্মুক্ত।

করিমুল হকের ছেলে আমিনুল হক সংবাদমাধ্যমে জানান, শিলিগুড়ির বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাঁর বাবাকে। বর্তমানে শারীরিক অবস্থা কিছুটা ভালো। তবে তাঁর বাবার হৃদযন্ত্রের একটি ভাল্ব ব্লকেজ হয়ে গিয়েছে বলে জানান আমিনুল।

যে ভাবে হলেন ‘অ্যাম্বুল্যান্স দাদা’
প্রসঙ্গত, একটা সময় অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে নিজের অসুস্থ মাকে সময় মতো হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেননি করিমুল। তার জেরে বাঁচাতে পারেননি মাকে। তারপরেই সংকল্প নেন গ্রামের অসুস্থ মানুষদের বাঁচানোর। গ্রামের অসুস্থ মানুষদের হাসপাতালে পৌঁছে দিতে একসময় নিজের বাইককেই অ্যাম্বুল্যান্স বানিয়ে ফেলেন করিমুল। সেই অ্যাম্বুল্যান্স বাইকে চাপিয়ে অসুস্থদের পৌঁছে দিতে থাকেন কাছে-দূরের বিভিন্ন হাসপাতালে। তাঁর এই কাজের জন্যই এলাকায় তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন ‘অ্যাম্বুল্যান্স দাদা’ নামে। ২০১৭ সালে তাঁর এই সেবাধর্মের জন্য পদ্মশ্রী পুরস্কারেও সম্মানিত হন।

আপাতত বন্ধ বাইক অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা
এদিকে করিমুল অসুস্থ হয়ে পড়ায়, আপাতত তাঁর বাইক অ্যাম্বুল্যান্স বন্ধ থাকছে। সুস্থ হয়ে ফের মানুষের প্রয়োজনে বাইক অ্যাম্বুল্যান্স চালাবেন বলে জানান করিমুল হক। শীঘ্রই সুস্থ হয়ে ফের মানবসেবার কাজ করতে চান বলে ইচ্ছেপ্রকাশ করেন তিনি। তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছেন এলাকাবাসীও।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version