বঙ্গ BJPর অন্তর্দ্বন্দ্ব একেবারে প্রকাশ্যে। কখনও বিজয়া সম্মিলনী নিয়ে শিবিরের ক্ষমতা প্রদর্শন তো কখনও সংবাদমাধ্যমের সামনেই বিরোধীতা। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরোধী তৃণমূলের কর্মসূচির মঞ্চে হাজির হন BJPর কেন্দ্রীয় নেতা অনুপম হাজরা। তৃণমূলের মঞ্চে তাঁর এই উপস্থিতি নিয়েই রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল।

১২ দিনে পা দিয়েছে বিশ্বভারতীতে তৃণমূলের অবস্থান বিক্ষোভ । বিশ্বভারতী থেকে রবীন্দ্রনাথের নাম না থাকা বিতর্কিত ফলক সরাতে হবে সেই দাবি নিয়েই এই অবস্থান-বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশ মতোই এই অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে তৃণমূল। মঙ্গলবার সকালে সেই তৃণমূলের অবস্থান-বিক্ষোভের মঞ্চে গিয়ে রবীন্দ্রমূর্তিতে মাল্যদান করলেন BJPর কেন্দ্রীয় নেতা অনুপম হাজরা। সেখান থেকেই বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে নজিরবিহীন ভাবে আক্রমণও করেন তিনি । বলেন, ‘যেদিন এই উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হবে সেদিন আমরা বোলপুরবাসীরা গোবর জল দিয়ে বিশ্বভারতী এলাকা শুদ্ধিকরণ করব।’

সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এদিন অনুপম হাজরা বলেন, ‘এই ভিসি হচ্ছেন ভন্ড ভিসি। তিনি চেষ্টা করছেন BJP সাজার, যাতে ওঁর মেয়াদকালটা বাড়ে। উনি BJP হবার নাটক করেন। ওঁর নামটা বিদ্যুৎ না, উনি হচ্ছেন বিশ্বভারতীর বুকে আছড়ে পড়া বজ্রবিদ্যুৎ। কারণ, উনি যখন থেকে এসেছেন শান্তিনিকেতনে পৌষ মেলা বন্ধ হয়েছে, বসন্ত উৎসব বন্ধ হয়েছে। শান্তিনিকেতনের মানুষ বোলপুরের মানুষ বিরক্ত। এত কিছু হচ্ছে কারণ উনি বহিরাগত, শান্তিনিকেতন সম্বন্ধে না কোন আইডিয়া আছে না বোলপুরের মানুষের মনোভাব উনি বোঝেন। উনি আশ্রমিকদেরকে গালিগালাজ করেন, প্রাক্তনীদেরকে ভর্ৎসনা করেন। অতএব এই ধরনের মানুষ শান্তিনিকেতনের বুকে একদম ভাইরাসের মতো।’

এখানেই শেষ নয়, রীতিমতো কটাক্ষ করে বলেন,’আমরা বোলপুরবাসী যারা আছি, তারা যেদিন ওঁর মেয়াদকাল শেষ হবে। সেদিন শান্তিনিকেতন এবং বিশ্বভারতী এলাকা গোবর জল দিয়ে শুদ্ধিকরণ করব। একবছর আগে থেকেই এই উপাচার্যকে সরানোর কথা বলেছি।’

অনুপম হাজরার তৃণমূলের ধরনা মঞ্চে গিয়ে বক্তব্য রাখাকে তীব্র কটাক্ষ করেন BJP মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে ভোটের সময় লাঞ্চ করার প্রসঙ্গ টেনে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, ‘BJPতে এসে কেউ কাউকে ধন্য করেননি। আগে যারা BJP করতেন, তারা হারবেন জেনে, জমানত বাজেয়াপ্ত হবে জেনেও, জীবন যৌবন সর্বস্ব দিয়ে পার্টিটা করতেন। মার খাবেন জেনেই BJPর পতাকা কাঁধে তুলে নিয়ে দাঁড়াতেন। এখন BJP ক্ষমতায় আসতে পারে জেনে এখন অনেকেই দলে এসেছেন। কেউ কেউ দলের নিয়ম নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন, আবার কারও কারও সংস্কৃতিটা এখনও বুঝতে বাকি আছে, তাই ভোটের সময় অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি মাছের ঝোল ভাত খেয়ে হজম হয় কিনা সেই পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন।’ এখানেই শেষ নয়, তিনি বলেন, ‘কেউ চাইলে সরাসরি তৃণমূলে চলে যেতে পারে।’

উপাচার্যের বিরুদ্ধে এবার থানায় শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট

এর পালটা ফুঁসে উঠেছেন অনুপম হাজরাও। তিনি বলেন, ‘এসি ঘরে বসে থাকা একজন তোতাপাখি, যিনি শেখানো বুলি পড়েন। উনি জানেন না পার্টিতে কোণঠাসাদের জন্য আমি কতটা লড়াই করছি উনি জানেন না। এছাড়া উনি শান্তিনিকেতনের মনোভাব বুঝবেন না। BJPর প্রোটোকল ভেঙে উনিই রাজ্য পদাধিকারী হয়ে কেন্দ্রীয় পদাধিকারীর উপর প্রশ্ন করছেন।’ সব মিলিয়ে ফের প্রকাশ্যে নব্য BJP বনাম পুরাতন BJPর দ্বন্দ্ব।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version