রিয়েল এস্টেট থেকে ফিনান্স, বিনোদন থেকে হোটেল সাহারা গ্রুপের ব্যবসা একাধিক ক্ষেত্রে ছিল বিস্তৃত। তাঁর ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কর্মী থেকে বিনিয়োগকারী সবাইকে সাহারা পরিবার বলে বর্ণনা করতেন সাহারা কর্তা। বাংলাতেও একসময় ছিল তাঁর কিছু বিনিয়োগ। ২০১৩ সাল নাগাদ এক সাক্ষাৎকারে সুব্রত রায়ের সোজাসাপ্টা কথায় ইঙ্গিত মিলেছিল বাংলার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের সমীকরণ।
২০১৩ সাল নাগাদ বাংলায় বিনিয়োগ নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে কথা বলার সময় তৃণমূলনেত্রীকে নিয়ে সাহারাশ্রীর গলায় ঝরে পড়ে অভিমান। তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে আমার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ কথা হত। বাংলায় বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা চলত। বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে আমার ভালোই বাক্যলাপ চলত। কিন্তু সমস্তটা বদলে গেল তাঁর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর। তিনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর কোনওদিন আমাকে আর ডাকেননি বা যোগাযোগ করেননি। আমার মনে হয় ওঁর আর আমাকে দরকার নেই। এখানে আর আমার প্রয়োজন নেই।’ যদিও ওই একই সাক্ষাৎকারে বাংলায় বিনিয়োগ নিয়েও আগ্রহী স্বর শোনা যায় তাঁর মুখে।
সেদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুব্রত রায় জাানিয়েছিলেন, ‘আমি সত্যিই এই রাজ্যের জন্য কিছু করতে চাই। এখানকার মানুষ যেভাবে স্বাগত জানান, তাতে যেকোনও বিনিয়োগকারী আগ্রহী হবেন।’ তৎকালীন পরিস্থিতিতে গুজরাট, ছত্রিশগড়, মধ্য প্রদেশ, উত্তর প্রদেশ এবং বিহারে ব্যবসার পরিস্থিতির সঙ্গে বাংলার তুলনা টেনে এই মন্তব্য করেছিলেন। সেই সাক্ষাৎকার থেকেই জানা যায় সুন্দরবনে একটি ট্যুরিজম প্রজেক্টের পরিকল্পনা করেছিলেন সাহারাশ্রী কিন্তু পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের পর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার থেকে সবুজ সংকেত পায়নি সে প্রজেক্ট। শোনা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের কাছে টাউনশিপ তৈরির জন্য ১০০০ একর জমি চেয়েছিলেন সাহারা ইন্ডিয়া গ্রুপ।
উল্লেখ্য, সফল এই শিল্পপতির সবথেকে সফল নিয়োগকারী হিসেবেও রয়েছে সুনাম। দেশে সবথেকে বেশি নিয়োগ হয় ভারতীয় রেলে। একবার টাইমস ম্যাগাজিনে সাহারাকে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নিয়োগকারী হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছিল।