এই সময়, খড়দহ: টার্গেট ছিল বিদেশিদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতানো। সেই মতো খড়দহে কল সেন্টার খুলে আমেরিকা, কানাডার নাগরিকদের সঙ্গে প্রতারণা করছিল প্রতারকরা। তদন্তে নেমে আন্তর্জাতিক সাইবার প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত ৬ জনকে দেরাদুন থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই নিয়ে এই চক্রের মোট ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করল ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দারা। আনুমানিক ৮ হাজার কোটি টাকার সাইবার প্রতারণা হয়েছে বলে অনুমান ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধানের। শনিবার ধৃতদের ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। আমেরিকা এবং কানাডার প্রায় ৮০ জন নাগরিক এই প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতারকরা মূলত ভয়েস চেঞ্জারের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় বসবাসকারী প্রবীণ নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলত। পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে কম্পিউটার খুব একটা বোঝে না এমন প্রবীণ নাগরিকদের তারা টার্গেট করত। কম্পিউটারের অ্যান্টি ভাইরাসের মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে, নতুন করে অ্যান্টি ভাইরাস দেওয়ার জন্য প্রতারকরা লিঙ্ক পাঠাত। সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই অ্যাকাউন্টের ডিটেলস চলে আসত প্রতারকদের কাছে। এরপর খড়দহে বসে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিত প্রতারকরা।

ব্যারাকপুরের গোয়েন্দা প্রধান শ্রীহরি পাণ্ডে শনিবার এক সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, গত ১৮ অক্টোবর গোপন সূত্রে প্রতারণা চক্রের খবর পেয়ে খড়দহের বলরাম হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকার একটি কল সেন্টারে হানা দিয়েছিল পুলিশ। ১০ জন গ্রেপ্তার হয়। পরবর্তীতে এই মামলার তদন্তভার কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগকে দেওয়া হয়। এর পর তদন্তে নেমে গত ২৫ অক্টোবর গোয়েন্দা বিভাগ আরবাজ হাসান নামে একজনকে সল্টলেকের একটি হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আন্তর্জাতিক প্রতারণা চক্রের হদিশ পান গোয়েন্দারা। সেই সূত্র ধরে গত তিন দিন আগে উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনের একটি পাঁচতারা হোটেল থেকে আরও ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা বিভাগের পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা হলো সৈয়দ শাহাবাজ হাসান, সোনু জয়সওয়াল, কৃষ্ণকুমার সিং, অনীশ ঠাকুর, ফরহাদ হাসান ও হর্ষ দিনানি। এদের মধ্যে শাহাবাজ, সোনু, অনীশ এবং ফারহাদের বাড়ি খড়দহে। কৃষ্ণকুমার থাকে টিটাগড়ে। হর্ষ দিনানি কলকাতার গরফার বাসিন্দা।

২০১৯ সাল থেকে এই কল সেন্টার কাজ করছে বলে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান শ্রীহরি পাণ্ডের দাবি। ধৃতদের কাছ থেকে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল, ভয়েস চেঞ্জার, গাড়ি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। বিটকয়েন এবং হাওলার মাধ্যমে ওই টাকা যেত বলে তদন্তে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version