এই সময়, আসানসোল: গত ৮ দিন ধরে একাধিক উপায়ে চলছে উদ্ধারের চেষ্টা। কিন্তু ফল মেলেনি। উত্তরকাশীর নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের একাংশে ধস নামার পর থেকে এখনও আটকে রয়েছেন ৪১ জন শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে বাংলার ৩ পরিযায়ী শ্রমিকও রয়েছেন। শ্রমিকদের উদ্ধারের জন্য চারদিকে একাধিক যন্ত্রের খোঁজখবর নিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর এই অবস্থায় ফের আলোচনায় উঠে এল ৩৪ বছর আগের রানিগঞ্জের মহাবীর কোলিয়ারি রেসকিউ অপারেশন। সম্প্রতি রিলিজ় হওয়া বলিউড সিনেমা ‘মিশন রানিগঞ্জ’-এর জেরে সেই ঘটনার কথা এখন অনেকেরই জানা। সেবার শ্রমিকদের উদ্ধারে ব্যবহার করা ড্রিল মেশিনের খোঁজ নিল কেন্দ্রীয় সরকার। কোল ইন্ডিয়া মারফত ইসিএলের কাছ থেকে ওই ড্রিল মেশিনের হাল-হকিকত জানতে চাইল কয়লা মন্ত্রক।

গত ১২ নভেম্বর ভোরে উত্তরকাশীতে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের একটি অংশ ব্রহ্মখাল ও যমুনোত্রীর জাতীয় সড়কের উপর হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। এ ভাবে প্রায় ২০০ মিটার এলাকা ধসে ভেঙে পড়ার পর তাতে আটকে পড়ে ৪১ জন শ্রমিক। সিলকিয়ারা ও দনদলগাঁওের মধ্যে সুড়ঙ্গটি তৈরি করা হচ্ছিল যা চারধাম প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। সুড়ঙ্গটি তৈরি হলে উত্তরকাশী থেকে যমুনোত্রী ধাম যাওয়ার দূরত্ব ২৬ কিমি কমবে। সেই কাজ করতে গিয়েই নামে বিপর্যয়। রবিবার ঘটনাস্থলে যান কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ ও হাইওয়েজ়-মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি। তিনি জানান, ইতিমধ্যে উদ্ধার অভিযানে দু’টি অগার মেশিন কাজ করছে। মন্ত্রী বলেন, ‘মেশিন দু’টি ঠিকঠাক কাজ করলেই আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে আগামী দু’-আড়াই দিনে পৌঁছনো যাবে।’ উদ্ধারকাজের জন্য বিশেষ ধরনের একাধিক যন্ত্রও আনানো হচ্ছে বলে জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

এর পর রবিবার রাতেই কোল ইন্ডিয়ার অন্যতম ডিরেক্টর অনিলকুমার রানা ইসিএলের সদর দপ্তরে যোগাযোগ করেন। আসানসোল মহকুমার শাকতরিয়ায় ইসিএলের ডিরেক্টর নীলাদ্রি রায় বলেন, ‘রাতেই কোল ইন্ডিয়ার এক ডিরেক্টর ফোন করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন এ ব্যাপারে সরাসরি ইসিএলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে কয়লা মন্ত্রকের তরফে। ১৯৮৯ সালের ১৩ নভেম্বর রানিগঞ্জের মহাবীর কোলিয়ারিতে খনির ভেতরে জল ঢুকে ৭১ জন শ্রমিক আটকে পড়েন।

সেই দুর্ঘটনার ৩ দিন পর ভূগর্ভ থেকে প্রায় ৮৬ মিটার গভীর থেকে স্টিলের তৈরি ক্যাপসুল লিফ্টে করে ৬৫ জন খনিকর্মীকে উপরে তুলে নিয়ে এসেছিলেন তদানীন্তন চিফ মাইনিং ইঞ্জিনিয়ার যশোবন্ত সিং গিল। এই রেসকিউ অপারেশনে ক্যাপসুল লিফ্টগুলি নামানোর জন্য ড্রিল করতে কোন মেশিন ব্যবহার করা হয়েছিল তারই খোঁজ চাইছে কয়লা মন্ত্রক।’ নীলাদ্রি রায় আরও বলেন, ‘কোল ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর যা যা জানতে চেয়েছিলেন সবটাই জানিয়েছি। এবং ওই বিশেষ ড্রিল মেশিন আসানসোলের যে বেসরকারি সংস্থা সরবরাহ করেছিল তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। বাকিটা কোল ইন্ডিয়া বা কয়লা মন্ত্রক করবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version