এই সময়: বৃহস্পতিবারই নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলীয় কর্মসূচি থেকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলে নতুন-পুরোনোর সমন্বয়ের বার্তা দিয়েছিলেন। মমতার সেই বার্তার যৌক্তিকতার সঙ্গে একশো শতাংশ সহমত হয়েও পুরোনো নেতাদের একাংশের ভূমিকা ও উদ্দেশ্য নিয়ে শুক্রবার সংশয় প্রকাশ করলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।

এদিন সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘পুরোনোদের শুধু সাংসদ অথবা বিধায়ক হতে হবে– তারই বা কী মানে আছে? পুরোনোরা তো সংগঠনের কাজও করতে পারেন।’ কুণালের প্রশ্ন, ‘সংগঠনের কাজ কি দলের কাজ নয়?’ এদিন একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনও অসুস্থ ও বৃদ্ধ সাংসদ বিমানে চেপে দিল্লি যাবেন, তার থেকে ভালো–তিনি পার্টি অফিসে বসে দলকে গাইড করুন। পুরোনোরা তো নিজেরাই বলতে পারেন, এতদিন আমি জনপ্রতিনিধি ছিলাম, এ বার সংগঠনের কাজ করব। দল করা মানে তো শুধু সাংসদ-বিধায়ক হওয়া নয়।’

সিপিএমে বৃদ্ধতন্ত্র কায়েম হওয়া নিয়ে বারবার সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটকে। এ বার তৃণমূলেও যদি পুরোনোরা পদ আঁকড়ে বসে থাকেন, তাহলে রাজ্যের শাসক দলের দশাও সিপিএমের মতো হবে বলেই কুণালের অভিমত। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘বৃদ্ধরা যুগের পর যুগ ধরে পদে বহাল থাকলে নতুনদের মধ্যে হতাশা আসবে। তাঁরা কি শুধু পোস্টার সাঁটবেন আর দেওয়াল লিখবেন?’

তৃণমূলের একাংশের মতে, উত্তর কলকাতার এক বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতাকে নিশানা করেই মূলত এ সব কথা বলেছেন কুণাল। আবার তৃণমূলের অন্য একটি অংশের যুক্তি, এদিন কুণাল কারও নাম না করলেও একই গোত্রে তিনি ফেলেছেন তৃণমূলের আরও কয়েকজন প্রবীণ নেতা ও সাংসদকেও। অতীতে উত্তর কলকাতার এক প্রবীণ সাংসদের সঙ্গে কুণালের মতবিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে।

দলে নতুন-পুরোনো ইস্যুতে এদিন কুণাল টেনে এনেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গও। তৃণমূলের মুখপাত্রের মতে, মমতা বনাম অভিষেক নয়, তৃণমূলের থিম হওয়া উচিত ‘মমতা এবং অভিষেক’। কোনও রাখঢাক না করেই কুণাল স্বীকার করে নিয়েছেন, মমতার সঙ্গে অভিষেকের দ্বন্দ্বের পরিকল্পিত জল্পনা দলেরই ক্ষতি করছে।

তিনি বলেন, ‘অনেকেই মমতাদির কাছে গিয়ে বলছেন, ওঁকে (অভিষেক) দিয়ে হচ্ছে না। আবার কেউ কেউ অভিষেকের কাছে গিয়ে অন্য কিছু বলছেন। এ সব বন্ধ হওয়া দরকার। মনে রাখতে হবে, অভিষেকেরও নেত্রী কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনও সন্দেহ নেই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের নেত্রী। তিনিই দলের শেষ কথা। তাঁর আত্মত্যাগ, লড়াই তৃণমূল কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করে। আবার অভিষেক নতুন প্রজম্ম। তিনি দলের সেনাপতি।’

Abhishek Banerjee : চোখের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে অভিষেক! ভরা সভায় ‘পিসি’ মমতার গলায় উদ্বেগ
মমতা এবং অভিষেককে দলের দুই ভরকেন্দ্র হিসেবে ব্যাখ্যা করে কুণালের সংযোজন, ‘এই দুই ভরকেন্দ্রর মধ্যে দূরত্ব তৈরি করা কারও উদ্দেশ্য হতে পারে না।’ বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরের সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি থাকা উচিত ছিল বলেও মন্তব্য করেছেন কুণাল।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version