এই সময়, কৃষ্ণনগর: সরকারি একটি মাদ্রাসার হস্টেলে ছাত্রীরা এক সঙ্গে রাতের খাবার খাওয়ার সময়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলাবলি করেছিল। এমন ‘শৃঙ্খলাভঙ্গের’ জন্য হস্টেলের মেট্রন ছাত্রীদেরকে ১০০ বার কান ধরে ওঠবোস করার শাস্তি দিয়েছেন বলে অভিযোগ। একটানা এত বার ওঠবোস করার সময়ে বেশ কয়েকজন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে ৬ ছাত্রীকে বুধবার মধ্য রাতে নদিয়ার শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

বৃহস্পতিবার সকলে হস্টেলে ফিরে গেলেও আতঙ্ক কাটেনি। কৃষ্ণনগর সংলগ্ন পানিনালা গ্রামে অবস্থিত গভর্নমেন্ট মডেল মাদ্রাসায় এই ঘটনায় নিন্দা করেছেন অভিভাবকরা। তবে মেয়েদের পড়াশোনার ক্ষতির আশঙ্কায় কেউ মুখ খোলেননি। বৃহস্পতিবার সকালে অসুস্থ ছাত্রীদের অভিভাবকদের কাছে খবর গেলে উদ্বিগ্ন হয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন তাঁরা। তবে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক মৃন্ময় পাল এদিন বিকেলে জানিয়েছেন, অসুস্থ ছ’জনকেই সুস্থ করে হস্টেলে ফেরানো গিয়েছে। অভিভাবকরা যাতে উদ্বিগ্ন না হন, আমরা তাঁদের সেই কারণে একাধিক বার অনুরোধ করেছি। কারণ ছাত্রীদের সামনে পরীক্ষা।

মাদ্রাসা সূত্রে জানা গিয়েছে, পরীক্ষার জন্য আবাসিক ছাত্রীদের প্রায় সকলেই এখন হস্টেলে রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক ছাত্রী বলে, ‘সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির প্রায় ৬৫ জন আবাসিক ছাত্রী অন্যদিনের মতো বুধবার রাতেও একসঙ্গে বলে খাবার খাচ্ছিলাম। খাওয়া শেষ হতেই হস্টেলের মেট্রন তিন জন ছাত্রীকে বাদ দিয়ে বাকি সবাইকে ১০০ বার কান ধরে ওঠবোস করার শাস্তি দেন। খাবার সময়ে একটু ফ্রি হওয়ার জন্য আমরা নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলাম। এটাই আমাদের অপরাধ। এক সঙ্গে এতবার ওঠবোস করতে গিয়ে আমরা ৬ জন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ি। দু’জন ছাত্রী অজ্ঞান হয়েও গিয়েছিল। তবে হস্টেলের স্টাফ-সহ অনেকেই আমাদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করেন।’

এ নিয়ে অভিযুক্ত মেট্রন রেহেনা বিবির বক্তব্য জানা যায়নি। তবে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক মৃন্ময় পাল বলেন, ‘এই ঘটনায় তিনি খুবই অনুতপ্ত বলে আমাদের জানিয়েছেন। জেলার একমাত্র সরকারি মাদ্রাসা এটি। তাই বৃহস্পতিবার গোটা ঘটনা আমরা সংশ্লিষ্ট জেলা আধিকারিকদের কাছে জানিয়েছি। আধিকারিকদের কাছ থেকে যেমন নির্দেশ আসবে আমরা সেই মতো পদক্ষেপ করব।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version