জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ফুলবানুর হাতে গুড়ের তেমন স্বাদ খোলতাই হত না। তাই মাজুবিবির কাছে আবার ফিরে গিয়েছিল সওদাগর গল্পের নায়ক মোতালেফ। মোতালেফের মতো ভাগ্য নয় বাংলার অগণিত শিউলিদের। কেননা এবার আর ‘হাত’ (হাতের জাদু) নয়; আবহাওয়াই অন্তরায়। আবহাওয়াকে শিউলিদের কাছে খলনায়কও বলা চলে। কেননা, তার জন্যই এবারে নতুনগুড় তেমন খোলতাই হচ্ছে না। উৎপাদনও কম। খেজুরগুড়ে সেই স্বাদ মিলছে না। সবমিলিয়ে বাজারও মন্দা।

আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ৭ দিনে ঠাসা কর্মসূচি, আজই উত্তরবঙ্গ সফরে মমতা

ইতিমধ্যেই বাজারে যে গুড়ের রসগোল্লা বা মিষ্টি এসেছে তার বেশিরভাগই কৃত্রিম স্বাদ আর গন্ধ। আসল গুড়ের স্বাদ ভুলে যেতে বসেছে গ্রামবাংলা। আউশগ্রামের শিউলি বা পাসি সুলতান কারিগর জানান, এবারের রসে তেমন জুত নেই। প্রথম কাট কোনরকম হলেও দ্বিতীয় কাটের তেমন স্বাদ নেই। গন্ধও নেই আগের মতো। 

কেন এরকম হচ্ছে?

এর জন্য শিউলিরা দায়ী করছেন আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনাকেই। তাঁদের মত হল, ডিসেম্বর পড়ে গেলেও এবারে তেমন শীত নেই। তাই রসের জুত নেই। সাদা হয়ে যাচ্ছে রস। তাঁরা জানাচ্ছেন, আজ থেকে বছরচল্লিশ  আগেও রস কাটতে এসে নানার সঙ্গে দুবার করে আগুন পোহাতে হত। এবারে সে বালাই নেই। ক্রেতারাও বলছেন, এ কেমন গুড়? স্বাদ গন্ধ কোথায় গেল? 

এ অঞ্চলের শিউলিদের চিন্তা, তাঁরা নদীয়া জেলার ১২০০ গাছ লিজ নিয়েছেন। এজন্য দিতে হবে ১ লাখ টাকা। কিন্তু এখন টাকা তুলবেন কীভাবে? লাভই-বা কী ভাবে হবে?

রসের সমঝদার দেবকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলির ডানকুনি থেকে রস আর খেজুর গুড় কিনতে এসেছেন। তাঁর কথায়, শীতের অন্যতম অনুষঙ্গ এই খেজুর গুড়। পাটালি আর একটু ভাল নলেনের টানে এখানে আসা। কিন্তু এবারে সেই মজা নেই।

আরও পড়ুন: Malbazar: এবার বাছুর মেরে খেল চিতাবাঘ! ভয়ে বাড়ি থেকেই বেরোচ্ছেন না এলাকাবাসী…

খেজুর গুড়ের স্বার্থে মোতালেফ ফুলবানুর কাছ থেকে মাজুর কাছে ফিরেছিলেন। কিন্তু প্রকৃতিই যদি বিরূপ থাকে, তবে একালের শিউলিরা আর কার কাছে যাবেন? আবহাওয়া অনুকূল না হলে রস মিলবে না, মিলবে না খেজুর গুড়, আসবে না সেই স্বাদ-গন্ধ। 

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version