হাসপাতালে জন্ম হয়েছে সদ্যোজাত কন্যা সন্তানের। সদ্যোজ্যাত শিশু কন্যাকে নিয়ে আনন্দের শেষ নেই বাবার। কন্যা সন্তানকে ‘লক্ষ্মী’ রূপে বরণ করে স্বাস্থ্য কর্মীদের মিষ্টিমুখ করিয়ে, শেষমেষ ফুল বেলুন দিয়ে সাজিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে করে সদ্যোজাত কন্যা সন্তানকে বাড়ি নিয়ে গেলেন লাভপুরের নাসিরুল।

কন্যা সন্তানকে নিয়ে গর্ব নাসিরুলের

আজও কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য মাকে খোঁটা শুনতে হয়। সদ্যোজাত কন্যাকে হাসপাতাল ও আবর্জনার স্তুপে ফেলে চলে যাওয়া বা বিক্রি করে দেওয়ার মতো একাধিক ঘটনা সামনে আসে। কিন্তু বীরভূম জেলার লাভপুরের বাসিন্দা নাসিরুল নজির তৈরি করলেন।

লাভপুরের ষষ্ঠী নগরের বাসিন্দা নাসিরুল ইসলাম পেশায় বেসরকারি সংস্থার কর্মী। বছরখানেক আগেই তার বিয়ে হয় সাঁইথিয়ার বড়শিজা গ্রামের বাসিন্দা সাবিয়া খাতুনের সঙ্গে। গত ৩রা ডিসেম্বর তিনি সাঁইথিয়ার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় সাবিয়া। তারপর থেকে নাসিরুলে আনন্দের শেষ নেই।

হাসপাতাল থেকে সদ্যোজাত কন্যা সন্তানকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার দিন হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মীদের মিষ্টিমুখ করান নাসিরুল। সদ্যোজাত শিশুকন্যাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য যে অ্যাম্বুল্যান্সটি বরাদ্দ ছিল, সেটিকে ফুল ও বেলুন দিয়ে সাজানো হয়। সেই সুসজ্জিত অ্যাম্বুল্যান্স করে মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করেন নাসিবুল। এই ঘটনায় স্থানীয়রাও অবাক হয়ে গিয়েছেন এবং নাসিবুলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন।

কী বলছেন নাসিবুল?

নাসিরুল বাবু বলেন, ‘আমার মেয়ে তো লক্ষ্মী। আমরা স্বামী-স্ত্রী মিলে চেয়েছিলাম, ছেলে বা মেয়ে যাই হোক না কেন সে যেন সুস্থ এবং স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে। সেই প্রত্যাশাই পূরণ হয়েছে। এখন এর থেকে বেশি আমার আর কী চাই! আর আমার মেয়ে হল স্বয়ং মা লক্ষ্মী। সেই কারমে মা লক্ষ্মীকে বরণ করার জন্য এই বন্দোবস্ত করেছি।’

অ্যাম্বুল্যান্স চালক বিশ্বজিৎ বাউরি বলেন, ‘আমি এর আগে বহু মা ও সদ্যোজ্যাতকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছি। তবে এমন অভিজ্ঞতা আমার কাছে এই প্রথম। কন্যা সন্তান হওয়ার জন্য এর আগে আর কাউকে এত খুশি হতে দেখিনি।’

লাভপুরের বাসিন্দা বিকাশ রায় বলেন, ‘নাসিরুল খুবই ভাল ছেলে। এলাকায় সবাই ওকে ভাল ছেলে বলেই চেনে। ওঁর স্ত্রী সন্তান সম্ভবা, সেটা জানতাম। কিন্তু কন্যা সন্তান হওয়ার পর তিনি তাঁকে এইভাবে ঘরে আনবেন, তা বুঝতে পারিনি। আমরা সত্যিই খুব অবাক হয়ে গিয়েছি। আজকালকার দিনে এমন দেখা যায় না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version