এই সময়: পাহাড়ের স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগের জন্য পৃথক স্কুল সার্ভিস কমিশন তৈরির কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কার্শিয়াংয়ের মন্টেভিউ ময়দানে প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী ডিস্ট্রিক্ট স্কুল বোর্ড গঠন, জিটিএ কর্মীদের জন্য অবসরকালীন সুবিধে এবং চা-বাগানের শ্রমিকদের জন্য একগুচ্ছ সুযোগ-সুবিধের কথা ঘোষণা করেন।

এ দিনের সভা থেকে ৫৯টি প্রল্পের উদ্বোধন করেন মমতা। আজ, শনিবার দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান করার কথা রয়েছে তাঁর। পাহাড়ের স্কুলগুলিতে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগের জন্য পৃথক ব্যবস্থার কথা আগেই বলেছিলেন মমতা। এ দিন পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে তা-ই স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এ-ও জানান, পাহাড়ের জন্য তৈরি করা হচ্ছে পৃথক স্কুলবোর্ডও।

প্রাথমিক ভাবে এই কমিশনের মাধ্যমে ১৪৬টি আপার প্রাইমারি স্কুলে ৫৯০টি শূন্যপদে নিয়োগ করা হবে। এ ছাড়াও কমিশন, স্কুলবোর্ডের মাধ্যমে আরও এক হাজার নিয়োগ করা হবে। পাহাড়ের রাজনীতি বেশ কিছু দিন ধরেই টালমাটাল। ভাঙন ধরেছে তৃণমূলেও। জিটিএ (গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) নিয়ে যেমন বেশ কিছু অভিযোগ ছিল, তেমনই জিটিএ কর্মীদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়েও আলোচনা চলছিল।

লোকসভা ভোটের আগে জিটিএ কর্মীদের জন্য বড় সুখবর দিলেন মমতা। এ দিন তিনি বলেন, ‘জিটিএ কর্মীরা অবসরের পরে গ্র্যাচুইটি বাবদ ২০ লক্ষ টাকা পাবেন। ২০০৯ এবং ২০১৯ সালের বেতন কমিশনের সুপারিশও বিবেচনা করা হবে। এ ছাড়াও জিটিএ কর্মীরা ১০ মাসের লিভ এনক্যাশমেন্টেরও সুযোগ পাবেন।’

কার্শিয়াংয়ে সফরের দ্বিতীয় দিনেই বাগানে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে চা-পাতা তুলেছিলেন মমতা। তাঁদের সুখ-দুঃখ নিয়ে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন। এ দিনের সভা থেকে চা-শ্রমিকদের জন্যও সুখবর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ঘোষণা করেন, চা সুন্দরী প্রকল্পে ৩ লক্ষ শ্রমিকের জন্য পাকা বাড়ি তৈরি করে দেবে সরকার। যদি কেউ বাড়ি না নেন, তা হলে তাঁদের খাস জমির পাট্টা দেওয়া হবে।

সিকিমের দুর্যোগে এ রাজ্যের ক্ষতিগ্রস্ত ৫৩১টি পরিবারকে ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি তাঁদের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তার জন্য জিটিএ-র চেয়ারম্যান অনীত থাপাকে জমি দেখতে বলা হয়েছে। পাহাড়ে অন্যতম বড় সমস্যা পানীয় জলের সংস্থান। মুখ্যমন্ত্রী জানান, সেই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে ৩ লক্ষ ৩২ হাজার বাড়িতে পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হবে।

আগামী বছরের মধ্যেই এই ব্যবস্থা হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘দিল্লি এ সব করে না। আমরা নিজেদের টাকায় এই কাজ করি। আমরা পাহাড়ের দু’লক্ষ ছেলেমেয়েকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে সহজ শর্তে ঋণ দেব। ওই টাকায় ছেলেমেয়েরা হোটেল-দোকান বা অন্যান্য ব্যবসা করতে পারবেন।’

Mamata Banerjee: ‘রক্তের সম্পর্ক’ পাহাড়কে ৭৫ কোটি! বেতন বৃদ্ধি থেকে নিয়োগ, দরাজ মমতা
এর পাশাপাশি কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে ইনফর্মেশন টেকনোলজি (আইটি) হাব হবে। এ প্রসঙ্গে পাহাড়কে শান্ত রাখতে নয়া দাওয়াই দেন মমতা।

এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যদি পাহাড় শান্ত থাকে, তা হলে শিল্পপতিরা পাহাড়ে শিল্প গড়তে আসবেন।’ নাম না-করে বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, ‘পাঁচ বছর পরে কোনও কোনও লোক পাহাড়ে অশান্তি সৃষ্টি করতে আসে। আর পাহাড়ের উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে যায়। শান্তি থাকলে উদ্যোগীরা আসবেন। তা হলে এখানকার বাসিন্দাদের আর বাইরে যেতে হবে না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version