প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরেই মুড়িগঙ্গা নদীতে পলি জমে চড়া পড়ে কাকদ্বীপের লট নম্বর আট থেকে সাগরের কচুবেড়িয়া জেটিঘাটে পৌঁছতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় গঙ্গাসাগরে আসা পুর্ণ্যার্থীদের। ভাটার টান শুরু হলে বড় বড় ব্যাগ কাঁধে, পিঠে, মাথায় নিয়ে ড্রপ গেটে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় সকলকে। কুয়াশায় দৃশ্যমানতা কম থাকার ফলে মাঝেমধ্যেই নদীতে দিগ্ভ্রষ্ট হয়ে যায় ভেসেল ও বার্জ। পরিস্থিতি সামাল দিতে নাজেহাল হতে হয় পুলিশ-প্রশাসনকে। এ বার তাই ইসরোর বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে জেলা প্রশাসন। সেজন্য প্রত্যেকটি ভেসেল এবং বার্জের সারেঙদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ বার কন্ট্রোল রুম থেকে সারেঙদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য স্যাটেলাইট ফোনের ব্যবহার করা হবে।
গতবার মেলায় কুয়াশার জেরে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছিল পুণ্যার্থীদের। সেকথা মাথায় রেখে কুয়াশা মোকাবিলায় বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার অত্যাধুনিক ফগ লাইটের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। মুড়িগঙ্গা নদীতে ইলেকট্রিক টাওয়ারে প্রায় ছশোটি ফগ লাইট, লেজ়ার লাইট-সহ পাঁচ রকমের লাইট লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বিমানবন্দরে যে মুভিং লাইট থাকে, সেই লাইটও লাগানো হতে পারে। অতিরিক্ত কুয়াশা হলে তখনই এই লাইট জ্বালানো হবে।
এ বারও কাকদ্বীপ ও নামখানা পয়েন্টে মুড়িগঙ্গা নদীর পলি কাটায় বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। তৈরি করা হচ্ছে বিশেষ চ্যানেল। যে চ্যানেল দিয়ে ভাটার সময়ও ভেসেল পরিষেবা চালু রাখা যাবে বলে প্রশাসনের আশা। এ বারেও বাবুঘাট থেকে মেলার মাঠ পর্যন্ত একাধিক বাফার জ়োন গড়ে তোলা হচ্ছে। পুণ্যার্থীদের ভিড় বাড়লে এই বাফার জ়োনে বিশ্রামের ব্যবস্থা করা হবে।
যেখানে পানীয় জল, শৌচালয়, যাত্রী শেডের ব্যবস্থা থাকবে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, ‘জোরকদমে চলছে মেলার প্রস্তুতি। ইতিমধ্যে পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে সব কাজ শেষ হবে।’ পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, ‘এ বারের মেলায় ১৩ থেকে ১৫ হাজার পুলিশকর্মী ও উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা থাকবেন। থাকবে ড্রোন। থাকছে মেগা কন্ট্রোল রুম।’ চলতি মাসের শেষে বা জানু্যারির শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেলার প্রস্তুতি সরেজমিনে দেখতে আসবেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।