বাস্তবে এই দুই ট্রেনের কোনও অস্তিত্ব নেই তাঁদের কাছে। ভারতীয় রেল দপ্তরের মতে, এর পুরোটাই গুজব। আসানসোল-পুরী বন্দে ভারত এক্সপ্রেস নিয়ে যে আদেশনামা ভাইরাল হয়েছে তা পূর্ব রেলের তরফ থেকে সম্পূর্ণ ফেক বলে দাবি করা হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের সিনিয়র ডিসিএম বিকাশ কুমারও স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন যে এরকম কোনও সরকারি নির্দেশ তাঁদের কাছে আসেনি।
এদিকে, এই পরিস্থিতিতে বন্দে ভারত নিয়ে রাজনীতি জমে উঠেছে পুরুলিয়ায়। তৃণমূলের দাবি, এই অপপ্রচার লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ভোট বৈতরণী পার হওয়ার একটা উপায়। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার মতে, ‘এমনিতেই যে কয়েকটি বন্দে ভারত চালু হয়েছে তা সাধারণ মানুষের কাছে কোনও কাজের নয়।
পুরুলিয়া জেলার মানুষের কাছে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে আট গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে যাওয়া দুঃস্বপ্ন ছাড়া কিছুই নয়। তার উপর এসব ভুয়ো প্রচার।’ বিজেপি কর্মীদের অবশ্য দাবি, সম্প্রতি যে রাঁচি-হাওড়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেস দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে রীতিমতো সাড়া পড়েছে। তাই দলীয় নেতৃত্বের তরফে দিল্লিতে আরও বন্দে ভারত ট্রেনের দাবি পাঠানো হয়েছে। যে কোনও দিন তার ঘোষণা হতে পারে। পুরী বা বারাণসী বন্দে ভারত দেওয়া নিয়ে পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে না-করতে চাইলেও নতুন ট্রেনের দাবি রয়েছে বলে তিনি জানান।
অন্য দিকে, পুরুলিয়ার রেল পরিকাঠামোয় অতিরিক্ত বন্দে ভারত চালানো সম্ভব কিনা তা নিয়ে সন্দিহান রেলকর্মী ও আধিকারিকরাও। তাঁদের কথায়, বহু ট্রেন আদ্রা ডিভিশনে বাতিল করা হচ্ছে পরিকাঠামোগত সমস্যায়। যে ট্রেনগুলি চলছে তা দেরি করে গন্তব্যে পৌঁছচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে মেন্স ইউনিয়নের সভাপতি মলয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘পরিকাঠামোগত উন্নয়ন সম্পূর্ণ হওয়ার পর আরও বন্দে ভারত চালানো যেতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বহু ট্রেন বাতিল করা হচ্ছে পরিকাঠামোগত কাজ চলার জন্য।’ এই অবস্থায় বন্দে ভারত নিয়ে পুরুলিয়ার মানুষের মধ্যে যে উত্সাহ দেখা দিয়েছে তা কতটা বাস্তব রূপ পাবে তা নিয়ে রেলই সন্দিহান।