এই সময়: ২৪ ডিসেম্বর ব্রিগেডে লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের আসর থেকে রাজনীতিকে দূরেই রাখতে চাইছেন উদ্যোক্তারা। আড়াল থেকে বিজেপি-সহ গোটা গেরুয়া শিবির এই কর্মসূচির আয়োজক হলেও অনুষ্ঠানটি হচ্ছে বিভিন্ন মঠ-মিশনের সমবেত উদ্যোগ ‘অখিল ভারতীয় সংস্কৃত পরিষদ’-এর নামে। আরএসএস এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি চাইছে না, আগামী ২৪ তারিখ ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে কেউ বিজেপির ঝাণ্ডা নিয়ে হাজির হোক।

সূত্রের খবর, এ বিষয়ে বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্বকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার সল্টলেক অফিসে বিজেপির রাজ্য পদাধিকারীরা নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসেন। সেখানে সংঘ পরিবারের মনোভাবের কথা জানিয়ে দেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এরপরেই সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, বিভিন্ন জেলা থেকে বিজেপি কর্মীরা ২৪ তারিখ ব্রিগেডে গীতপাঠ শুনতে আসবেন ঠিকই, কিন্তু তারা কেউই বিজেপি কর্মীর পরিচয়ে আসবে না। অর্থাৎ, দলীয় ঝাণ্ডা থাকবে না কারও হাতে। সুকান্ত মজুমদারের কথায়, ‘নরেন্দ্র মোদী আসছেন। আমরা সবাই গীতাপাঠ শুনতে সেদিন ব্রিগেডে হাজির হবো। এটা বিজেপির অনুষ্ঠান নয়। তাই এর মধ্যে রাজনীতির রঙ না লাগানোই ভালো।’

ব্রিগেডে গীতাপাঠ কর্মসূচি যতই ‘অরাজনৈতিক’ হোক না কেন, লোকসভা ভোটের মুখে এই কর্মসূচির পিছনে যে গেরুয়া শিবিরের মেরুকরণের কৌশল লুকিয়ে আছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। ব্রিগেডের মঞ্চে সাধু-সন্তদের সঙ্গে উপস্থিত থাকার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও। গীতাপাঠ এবং শঙ্খধ্বনি শেষে বক্তৃতা দেওয়ার কথা তাঁর। মোদী ছাড়াও ওই মঞ্চে হাজির থাকার কথা রয়েছে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসেরও। উদ্যোক্তার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের ধারণা, সরাসরি রাজনীতির কথা না বললেও প্রধানমন্ত্রী এমন কিছু নিশ্চয়ই বলবেন যা, দলের নিচুতলার কর্মীদের জোশ বাড়াতে সাহায্য করবে।

চলতি মাসে গীতাপাঠ কর্মসূচির পরেই জানুয়ারিতে অযোধ্যায় নবনির্মিত রামমন্দিরের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এই দুই কর্মসূচি লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির পালে বাড়তি হাওয়া জোগাবে বলে গেরুয়া শিবিরের অনেকের অভিমত। বাংলার এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘আমরা ব্রিগেডে গীতাপাঠ শুনতেও যাব। আবার পরের মাসে অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন অনুষ্ঠানেও যাব। কোথাও আমাদের সঙ্গে ঝাণ্ডা থাকবে না। শুধু হিন্দুত্বের স্লোগান থাকবে। সেটাই আমাদের লোকসভা নির্বাচনে জয়ের পথ মসৃণ করে দেবে।’ ব্রিগেডে গীতাপাঠ কর্মসূচির প্রধান সংগঠক মানস ভট্টাচার্যের কথায়, ‘১৮ অধ্যায়ের গীতার মধ্য থেকে পাঁচটি অধ্যায় পাঠ করা হবে। সবাইকে গীতা সঙ্গে নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। আমরাও গীতা দেবো।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version