পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তথা পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া মাশরুম চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। মাশরুম চাষের জন্য কোনও উর্বর জমির প্রয়োজন হয় না। ঘরের পাশের অব্যবহৃত জায়গায় বা বাড়ির মধ্যে মাশরুম উৎপাদন করা যায় সহজেই। তাই বেকার যুবক-যুবতী ও গৃহবধূরা সংসারের সমস্ত কাজের পাশাপাশি বাড়ির মধ্যে মাশরুম চাষ করে নিজেদের স্বনির্ভর করছেন।
তমলুক ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে বেশকিছু গৃহবধূ প্রতিদিন গড়ে এক থেকে দেড় হাজার টাকার মাশরুম বিক্রি করছেন। রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনায় মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর প্রায় পাঁচ বছর ধরে মাশরুম চাষ করছেন। মাশরুম চাষের জন্য প্রয়োজন ধানের খড়। খড় দিয়েই তৈরি হয় মাশরুম চাষের বেড। খড়ের সঙ্গে প্রতিটি স্তরে স্তরে দেওয়া হয় মাশরুমের বীজ। এক একটি বেড তৈরি করতে খরচ পড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এক একটি বেড থেকে মাশরুম পাওয়া যায় ঘরে তিন থেকে চার কেজি। যার বাজার মূল্য ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। ফলে মাশরুম চাষ করে ভালোই মুনাফা করছেন মহিলারা।
লাভের অঙ্ক কেমন?
সিএডিসি প্রজেক্ট ডিরেক্টর উত্তম কুমার লাহা জানান, মাশরুম চাষ বেকার যুবক-যুবতী ও গৃহবধূদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলবে। তাঁদের বিকল্প কাজের দিশা দেখাতে পারবে। মাশরুম চাষের মধ্য দিয়ে একজন বেকার যুবক-যুবতী মাসে ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা রোজগার করতে পারবেন। এছাড়াও গৃহবধূরা বাড়িতে বসে না থেকে এই কাজ করলে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবেন।
মাশরুম চাষের পদ্ধতি
এক মহিলা জানান, মাশরুম চাষ অনেকটাই সহজ। সারা বছর মাশরুম চাষ হলেও শীতের সময় সব থেকে বেশি এটি চাষ করা হয়। মাশরুম চাষের জন্য প্রথমে ধানের খড়কে ছোট ছোট করে কেটে চুন মিশ্রিত জলে ডুবিয়ে রাখা হয়। এরপর জল থেকে ছেঁকে ছায়া ঘেরা জায়গায় শুকিয়ে নেওয়া হয়। তারপর সেই খড়গুলোকে প্লাস্টিক বেডে ভরা হয়। ওই বেডের চারটি স্তরে মাশরুম বীজ ফেলে দেওয়া হয়। ১৫ থেকে ২১ দিনের মধ্যে মাশরুম ফুটতে শুরু করে।