হেমাভ সেনগুপ্ত, শান্তিনিকেতন

ভূমিকম্প বিধ্বস্ত জাপানে সুনামি সতর্কতার মাঝে আতঙ্কের প্রহর কাটাচ্ছেন বিশ্বভারতীর জাপানিজ় বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুদীপ্ত দাস। সুদীপ্তই প্রথম ভারতীয়, যিনি ‘জাপানিজ় স্টাডিজ়’ বিষয়ে জাপান সোসাইটি প্রোমোশন অফ সায়েন্স (JSPS) বিভাগের ফেলোশিপ নিয়ে গবেষণা করতে গিয়েছেন। জাপানের টোকিয়ো ইউনিভার্সিটি অফ ফরেন স্টাডিজ়ে গবেষণা করছেন তিনি।

এই মুহূর্তে সদ্যোজাত সন্তান ও স্ত্রী সঙ্গীতাকে নিয়ে রয়েছেন টোকিয়োর ফুচুসি এলাকায়। বোলপুরে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে পরিবারের।
বুধবার সন্ধ্যায় টোকিয়ো থেকে ফোনে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত জাপানের বর্ণনা দিলেন সুদীপ্ত। তিনি বলেন, ‘আমি আমার পরিবার নিয়ে সুস্থই আছি৷ তবে সবচেয়ে যেটা দুশ্চিন্তার, তা হলো আজ দুপুরের পর থেকে টোকিয়ো শহরেও ৬-৭ বার ভূমিকম্প অনুভব করেছি। জাপানের উপকূলীয় অঞ্চলের অবস্থা খুবই খারাপ৷ এই মুহূর্তে জাপানের ৩৫ হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই, জল নেই। ৬ হাজারের বেশি মানুষকে রিলিফ সেন্টারে সরিয়ে আনা হয়েছে। জাপানের তোইয়ামা ও মিয়াজ়াকিতে নতুন করে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।’

বছরের প্রথম দিনটাই এসেছে দুঃস্বপ্নের মতো। সে দুঃস্বপ্নের কন্টিনিউয়েশন যেন চলছে এখনও। তিনি বলেন, ‘প্রায় ৮০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস উঠছে এখনও। প্রবল ঠান্ডা। তাপমাত্রা ১/২ সেলসিয়াস। কখনও কখনও মাইনাসের নীচেও চলে যাচ্ছে তাপমাত্রা। ফলে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। তার মধ্যেই এদিনও পশ্চিম ও মধ্য উপকূলবর্তী অঞ্চলে বারবার ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত জাপানের একটা বড় অংশ। এত মানুষ মারা গিয়েছেন। হাসপাতালেও আহত মানুষ ও তাঁদের পরিজনের ভিড়। ইশিকাওয়া দ্বীপের ওয়াজিমা শহরের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। কবে যে সব ঠিক হবে?’

এত বিপর্যয়ের মাঝেও গবেষণার কাজ মাঝপথে ফেলে চলে আসতে পারছেন না সুদীপ্ত। তিনি বলেন, ‘সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পরিবার নিয়ে আছি, তাই ভয় হচ্ছে৷ তবে ভারতীয় দূতাবাস আমাদের হেল্পলাইন নম্বর দিয়েছে। জাপান সরকারও দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে৷ বছরের প্রথম দিনই কিছুক্ষণ পরপর কেঁপে উঠেছিল মাটি। তার পর থেকে কেঁপেই চলেছে। তাও ভাগ্যিস নিউ ইয়ারের জন্য স্কুল-কলেজ বন্ধ ছিল। তাই প্রাণহানির সংখ্যা তুলনায় কম। না হলে বিপদ হয়ে যেত আরও।’

বোলপুরে থাকেন সুদীপ্তর বাবা-মা, দাদা-বৌদি। তাঁরাও দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। জাপানের আতঙ্ক ছায়া ফেলেছে বোলপুরের বাড়িতেও…



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version