কুবলয় বন্দ্যোপাধ্যায়

কৃত্রিম চামড়াটা ছাড়িয়ে ফেলতেই বেরিয়ে এসেছিল ইস্পাতের তৈরি ঝকঝকে একটা ‘হাত’। প্রাণহীন হলেও ওই হাত যে রীতিমতো কর্মক্ষম, কয়েক বার মুঠো করে এবং খুলে দেখিয়েও দিয়েছিল ভবিষ্যৎ থেকে আসা রোবট টি-এইট হান্ড্রেড। হলিউডের ব্লকবাস্টার ‘টার্মিনেটর-টু: জাজমেন্ট ডে’ ছবিতে বিশেষ এক ধরনের মাইক্রোপ্রসেসর-চালিত ওই যান্ত্রিক হাত তৈরি করেছিলেন বিজ্ঞানী মাইলস ডাইসন।

তবে তাঁর মতো বিজ্ঞানী শুধু ইউএসএ-তে নয়, থাকতে পারেন এ দেশেও। কেবল রুপোলি পর্দা নয়, বিজ্ঞানীর অস্তিত্ব থাকতে পারে বাস্তবেও। বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজ়িয়ম (বিআইটিএম) আয়োজিত তিন দিনের সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ফেয়ারে দেখা মিলল এমনই যান্ত্রিক হাতের।

ওই যান্ত্রিক হাত তো ছিলই। সেই সঙ্গে শক্তি সংরক্ষণ থেকে শুরু করে আরও নানা বিষয়ে কী ভাবে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগানো যেতে পারে, তারই নমুনা হাতে-কলমে দেখাল স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা। তারা দেখাল, প্রযুক্তিকে ঠিক মতো ব্যবহার করে কী ভাবে হঠাৎ ঘরে আসা বিপদকে এড়ানো যেতে পারে। বিপদ হতে পারে খালি বাড়িতেও।

তবে প্রযুক্তিকে ঠিক মতো ব্যবহার করলে সেই বিপদ কাটানো সম্ভব সহজেই। হয়তো কেউ বাড়ি তালাবন্ধ করে বেরিয়েছেন। কিন্তু কোনও যান্ত্রিক সমস্যার ফলে রান্নাঘরে রাখা এলপিজি সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিক করতে শুরু করেছে। এআই-কে ব্যবহার করলে এই বিপদ থেকে কী ভাবে উদ্ধার পাওয়া সম্ভব, সেটাই দেখাল শিলিগুড়ির কাছে সুকনার আর্মি পাবলিক স্কুলের সৌম্যদীপ জানা এবং কে ঋষভ। এই দুই পড়ুয়ার তৈরি মডেল বদ্ধ ঘরে গ্যাসের উপস্থিতি টের পাওয়া, এগজ়স্ট ফ্যান চালিয়ে সেই গ্যাস বার করে দেওয়া, আগুন ধরে গেলে স্প্রিঙ্কলার চালিয়ে আগুন নেভানো এবং সেই বাড়ির কোনও এক জনের মোবাইল ফোনে সতর্কবার্তা পাঠানো— এ সবই করতে সক্ষম।

AI ভয়েস ক্লোনিং ধরার 4 সংকেত! সতর্ক না থাকলে ঠকবেন যে কোনও সময়
বিআইটিএমের শিক্ষা আধিকারিক অদিতি ঘোষ বলছেন, ‘মঙ্গলবার এই মেলার উদ্বোধন হয়েছে। চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। এ বার এই মেলায় বাংলা, বিহার, ওডিশা ও সিকিমের ২৮৫ জন পড়ুয়া অংশ নিয়েছে।’ পরিবেশ রক্ষা থেকে শুরু করে শক্তি সংরক্ষণ— বিভিন্ন বিষয় নিয়েই নানা ধরনের মডেল তৈরি করে তার প্রদর্শন করেছে পড়ুয়ারা। তারই মধ্যে ভাবনার বৈচিত্রে কিছু কিছু মডেল নজর কেড়েছে অনেকেরই। এর মধ্যে রয়েছে বজবজ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি-র পড়ুয়াদের তৈরি যান্ত্রিক হাত। কোনও দুর্ঘটনায় কারও হাতের তেলো বাদ গেলেও যাতে তাঁর ‘বেসিক কাজকর্ম’ চালাতে সমস্যা না-হয়, সে জন্য কাজে আসবে এই বায়োনিক হাতটি।

বিআইটিএমের অধিকর্তা শুভব্রত চৌধুরী এই প্রদর্শনী সম্পর্কে বলেন, ‘খুব দ্রুত আমাদের পারিপার্শ্বিক বদলে যাচ্ছে। নতুন নতুন প্রযুক্তি আসছে। স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা অল্প সময়ের মধ্যে নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে এমন কিছু মডেল তৈরি করছে, যেগুলো সত্যিই অবাক করে দেওয়ার মতো। এ বার এমন বেশ কয়েকটি মডেল দেখলাম। খুব ভালো লাগল।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version