অভিযোগ, রেশন ব্যবস্থায় নজরদারি করতেই এমন নির্দেশ। ১৭ জানুয়ারি মন্ত্রকের জারি করা ‘কন্ট্রোল অর্ডার’-এ জানানো হয়েছে, কোন রেশন ডিলারকে কতটা খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছে ও তার কতটা বণ্টন হয়েছে, তা-ও জানাতে বাধ্য থাকবে খাদ্য দপ্তর। এই নির্দেশের দু’দিন আগেই কেন্দ্র ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড’ চালুর কথা ঘোষণা করেছিল।
যদিও কেন্দ্রের এই নির্দেশিকায় আদৌ উদ্বিগ্ন নয় রাজ্যের খাদ্য দপ্তর। খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, ‘বর্তমানে রাজ্যের খাদ্য বণ্টন ব্যবস্থা পুরোপুরি অনলাইনে পরিচালিত এবং স্বচ্ছ। কেউ চাইলেই তা দেখে নিতে পারেন। এটা আলাদা করে জানানোর কিছু নয়। তবে অনেক রাজ্যেই এই ব্যবস্থা নেই। সেই জন্যই হয়তো কেন্দ্র এই নির্দেশ জারি করেছে।’
কেন্দ্রের নতুন নির্দেশ অনুযায়ী, এক জন গ্রাহক দেশের যে কোনও জায়গায় গিয়ে নিজের আধার নম্বরের বায়োমেট্রিক যাচাই করিয়ে যে কোনও রেশন দোকান থেকে তাঁর বরাদ্দ পেতে পারেন। কোনও রেশন ডিলার ‘এক দেশ, এক রেশন কার্ড’ ব্যবস্থায় গ্রাহককে খাদ্যসামগ্রী দিতে অস্বীকার করতে পারবেন না। এর জন্য যাতে রেশনের দোকানে পর্যাপ্ত সামগ্রী সব সময় মজুত থাকে, তা-ও রাজ্য সরকারকে নিশ্চিত করার কথা জানানো হয়েছে। নতুন এই নির্দেশে রেশনের দোকানের কাজকর্ম নিয়েও নিয়মিত রিপোর্ট পাঠানোর কথাও জানানো হয়েছে। অনলাইনে কেন্দ্রকে এই তথ্য পাঠাবে সব রাজ্য।
এই মুহূর্তে খাদ্য দপ্তরের দুর্নীতি নিয়ে সরগরম রাজ্য। ২০১১-‘২১ পর্যন্ত খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। রেশন দুর্নীতিতে জেলে রয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়। সেই মামলাতেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গ্রেপ্তার করেছে বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যকে। এই দুর্নীতিতেই অভিযুক্ত সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে ধুন্ধুমার হয়। মাসখানেক কেটে যাওয়ার পরেও বেপাত্তা শাহজাহান। এ রকম অবস্থায় রাজ্যের বণ্টন ব্যবস্থায় রোজের নজরদারি কেন, তা নিয়ে সন্দিগ্ধ সব মহলই।
খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘আমাদের নতুন করে জানানোর কিছু নেই। দপ্তরের যাবতীয় কাজ অনলাইনেই কেন্দ্রকে জানানো হয়। ফলে আমাদের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনও জায়গা নেই।’ বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য এই নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, গত ১০ বছরে রেশনে যে ব্যাপক পরিমাণ চুরি ও দুর্নীতি হয়েছে, তা সাধারণ মানুষের ভাবনার বাইরে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে গরিবরা উপকৃত হবে।