পেটের জ্বালায় কত কিছু না করতে হয় মানুষকে। তবে কোনও কাজই যে ছোট নয়! পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে সৎ পথে রোজগারের বাসনা থেকে মতিভ্রম হয় অনেকেরই। তবে, সংসারে অভাব থাকলেও নিজের ছোট ব্যবসা লাটে উঠলেও শ্মশানে সৎকার বন্ধুর কাজ বেছে নিলেন গোবরডডাঙা এলাকার বাসিন্দা সমীর রায়।একসময় মহিলাদের পোশাক তৈরির ব্যবসা ছিল তাঁর। তবে ভাগ্যের পরিহাসে সেই ব্যবসা সঙ্গ দেয়নি। বন্ধ করে দিতে বড় ব্যবসায়। ব্যবসার বন্ধের কারণে সংসারে অভাব ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। তবে তার মধ্যেও হাল ছাড়েননি সমীর। এখন তিনি সংসার চালাতে হাজির শ্মশানে। পেট চালাতে শ্মশানে সৎকার বন্ধুর কাজ বেছে নিয়েছেন তিনি।

প্রতিদিন শ্মশানে আসা মৃতদেহ সৎকার করে তবেই জীবিকা অর্জন করতে হয় গোবরডাঙা পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সমীর রায়কে। তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় তেমনভাবে হয়ে ওঠেনি পড়াশোনা। তিন ভাইয়ের মধ্যে সে-ই সব থেকে ছোট। কোনওরকমে শুরু করেছিলেন পোশাক তৈরির ব্যবসা। কিন্তু, নানা কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে ছাড়তে হয় সেই ব্যবসা।

তারপর থেকেই নানাভাবে কাজের সন্ধানে ঘুরতে ঘুরতে পৌঁছন গোবরডাঙা শ্মশানে। প্রথমে কাঠ গোছানোর মধ্যে দিয়ে শুরু করেন কাজ। সেই সময় অন্য সৎকার কর্মীর দাহকার্য দেখে যেটুকু শেখা। অতীতে যে শ্মশানকে কিছুটা এড়িয়ে চলতেন, আজ সেই শ্মশানেই নিজের আবেগকে চেপে রেখে সৎকার বন্ধুর কাজ করতে হচ্ছে সমীরকে। এখন শ্মশানে আসা মৃতদেহ, তাঁদের নাম নথিভুক্ত করা থেকে শুরু করে চিতা সাজানো সবটাই সামলান এই যুবক।

কোনও একদিন শ্মশানে মৃতদেহর চাপ থাকায়, সমীরের ডাক পড়ে। প্রথম দিনই নিজের হাতে চারটি মৃতদেহ সৎকারের কাজ করে শুরু হয় সৎকার বন্ধু হিসাবে পথ চলা। সেই থেকে এখনও নিয়ম করে গোবরডাঙা শ্মশানের সৎকার বন্ধুর কাজ করে চলেছেন সমীর রায়। তার কথায়, ‘কোন কাজই যে ছোট নয়।’ তিনি বলেন, ‘এখানে কিছু কাজের জন্য এসেছিলাম। অল্প কিছু কাজ পেয়েছিলাম। এরপর এখানেই একটা কাজ জুটে যায়। সেই থেকে এই শ্মশানে কাজ করছি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version