এই সময়, আসানসোল: পরিত্যক্ত কয়লাখনি ভরাটের কাজ চললেও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চুরি। ঘটছে দুর্ঘটনাও। তাতে প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে কয়লাচুরিকেই ইস্যু করছে বিরোধীরা। ইসিএলের মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক শৈলেন্দ্র সিং যে তথ্য পেশ করেছেন তা থেকে জানা যাচ্ছে, তিন মাসে সংস্থার এলাকায় অবৈধ কয়লাখনির সংখ্যা বেড়েছে।পরিসংখ্যান বলছে, গত ডিসেম্বরে ১০৩, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১৬৪ এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ১৯২টি অবৈধ খনি ভরাট করা হয়েছে। অর্থাৎ গত তিন মাসে পরিত্যক্ত খনি থেকে কয়লা চুরি রুখতে মোট ৪৫৯টি অবৈধ খনি ভরাট করেছে ইসিএল। অন্য দিকে, এই মুহূর্তে ইসিএলের চালু কোলিয়ারির সংখ্যা ৭৯।

ইসিএলের পেশ করা পরিসংখ্যান থেকেই বোঝা যাচ্ছে, সরকারি ভাবে যতগুলো চালানো হয়, তার চেয়ে অবৈধ কয়লাখনির সংখ্যা প্রায় ৬ গুণ বেশি। সংস্থার নিজস্ব এলাকায় ওই খনিগুলো হয় বেআইনি ভাবে চলছে নয় সেগুলো ভরাট করা হচ্ছে। কয়েকদিন আগেই চুরুলিয়ার কাছে একটি কয়লা ডিপো থেকে ২৮০ টন চোরাই কয়লা এবং ১৪টি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করে জামুড়িয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে সিআইএসএফ।

সম্প্রতি আসানসোলের দক্ষিণ থানা এলাকার দামরায় কয়লা মাফিয়াদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামেন স্থানীয় মহিলারা। ২০২০ সালে কয়লা চুরির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেই মামলায় ইসিএলের জেনারেল ম্যানেজার পদমর্যাদার আধিকারিক, প্রাক্তন চিফ সিকিউরিটি অফিসার, কয়লা মাফিয়া সমেত মোট ৪১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরও কয়লা চুরি বন্ধ হয়নি।

এবার আসানসোল কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী করেছে জাহানারা খানকে। তিনি বলেন, ‘রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, সালানপুর, বারাবনি, পাণ্ডবেশ্বর সমেত একাধিক জায়গায় অবৈধ কয়লাখনন ব্যাপক হারে বেড়েছে। এই নির্বাচনে বিষয়টিকে আমরা ইস্যু করেছি। এ নিয়ে আমাদের ধারাবাহিক আন্দোলনও চলছে।’

অন্য দিকে, এই কেন্দ্রে বুধবার প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপি। এতদিন প্রচারই চালাতে পারেনি গেরুয়া শিবির। দলের জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘কয়লা চুরি অবশ্যই নির্বাচনের ইস্যু। আমরা অবৈধ খনি নিয়ে পুলিশ কমিশনারের দপ্তরে একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েছি। একই সঙ্গে অভিযোগ জানিয়েছি ইসিএলের চেয়ারম্যানের কাছেও।’

Blood Bank : ভোটে ব্যস্ত সব দল, রক্তের অভাব জেলায়

জেলা তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী সিপিএম প্রাথীর বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন। বলেন, ‘জাহানারা খানের বক্তব্যের সঙ্গে আমরাও সহমত। আগের তুলনায় কয়লা চুরি বেড়েছে। ওঁরা যদি কোনও আন্দোলন করেন অবশ্যই আমরা পাশে থাকব। তবে মনে রাখতে হবে ইসিএলের খনি এলাকায় পাহারায় থাকে সিআইএসএফ এবং সংস্থার নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীরা। তাহলে চুরি কেন হচ্ছে সেটাও কিন্তু প্রশ্ন।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version