পিয়ালি মিত্র ও নান্টু হাজরা: “সিবিআই তদন্ত হলে খুব ভালো হবে।” মেডিকেল চেকআপে যাওয়ার সময় বললেন শেখ শাহজাহান। এই মুহূর্তে শেখ শাহজাহান ইডি হেফাজতে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে শেখ শাহজাহানকে মেডিকেল চেকআপের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় জোকা ইএসআই হাসপাতালে। সেই সময় ইডি দফতর থেকে বেরনোর সময় শেখ শাহজাহানকে প্রশ্ন করা হয় যে, এবার তো সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে? উত্তরে শেখ শাহজাহান বলেন, “সিবিআই তদন্ত হলে খুব ভালো হবে।”এরপর তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ইডি-ও তদন্ত করছে? উত্তরে শেখ শাহজাহান আবার বলেন,”সবটাই ভালো হবে।”
ওদিকে বুধবার হাইকোর্টের নির্দেশের পর ইতিমধ্যেই সন্দেশখালির মানুষের অভিযোগে নিতে দুটি ইমেইল আইডি ক্রিয়েট করেছে সিবিআই। গতকাল রাতেই জেলাশাসককে সেই ইমেল আইডি পাঠিয়ে সেটি সার্কুলেট করতে বলা হয়েছে। যাতে সাধারণ মানুষ সেই ইমেইল মারফত সরাসরি সিবিআই-কে অভিযোগ জানাতে পারে। বুধবারই কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআইকে অনলাইন পোর্টাল খোলারও নির্দেশ দেয়। সিবিআই সূত্রের খবর, পোর্টাল খোলার প্রস্তুতিও ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে সেটি যেহেতু কিছুটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার, তাই তার আগে ইমেইল আইডি ক্রিয়েট করা হয়েছে। গতকাল কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরই নিজাম প্যালেসে বৈঠক করেন সিবিআই কর্তারা। সিবিআই সূত্রের খবর, তাদের কাছে কী ধরণের অভিযোগ জমা পড়ছে এবং জেলা পুলিসে কী ধরণের অভিযোগ দায়ের হয়েছে, সেগুলি খতিয়ে তারপর মামলা রুজু করা হবে।
প্রসঙ্গত, গতকাল সন্দেশখালির সব মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত নির্দেশ দেয়, রাজ্যকে সব রকম সাহায্য করতে হবে সিবিআইকে। সেখানকার মানুষ তাদের অভিযোগ সরাসরি সিবিআই-কে জানাতে পারবে। সিবিআই-কে পোর্টাল তৈরি করতে হবে। জমি দখল, ধর্ষণ, চাষের জমিকে ভেড়িতে পরিবর্তন করা সহ সমস্ত অভিযোগের তদন্ত করবে সিবিআই। আদালতের নজরদারিতে হবে তদন্ত। স্পর্শকাতর এলাকায় ১৫ দিনের মধ্যে সিসিটিভি বসাতে হবে। ১৫ দিনের মধ্যে এলইডি আলো বসাতে হবে। সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিতে হবে। যে কোনও পদমর্যাদার যে কোনও ব্যক্তিকে তদন্তের স্বার্থে ডেকে পাঠাতে পারবে সিবিআই। ২ মে পরবর্তী শুনানি। সেদিন রিপোর্ট দেবে সিবিআই।
গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতির তদন্তে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে যায় ইডি। সেখানে তাদের তাড়া করে জনতা। শেখ শাহজাহানের অনুগামীদের হাতে আক্রান্ত হন ইডি অফিসাররা। সেই ঘটনার ৫৬ দিনের মাথায় মিনাখাঁ থেকে শেখ শাহজাহান গ্রেফতার হন। ইতিমধ্যে শেখ শাহজাহানের ১২ কোটি ৭৮ লাখ চাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। বাড়ি, জমি, ভেড়ি-সহ একাধিক সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা মনে করছে, শাহজাহানের যে সম্পত্তি, তার সঙ্গে দুর্নীতির সম্পর্ক রয়েছে। রেশন দুর্নীতির টাকা তার কাছে গিয়েছে!
শেখ সাবিনা ফিশারির ম্যানেজার মহিদুল মোল্লার বয়ানকে হাতিয়ার করেই শেখ শাহজাহানের সম্পত্তির হদিশ পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। জেরার মুখে মহিদুল জানিয়েছেন কীভাবে টাকা জমা পড়ত। আর সেই লিংক ধরেই শাহজাহানের টাকার উৎস সন্ধানে মরিয়া ইডি। টাকা কোথা থেকে আসত, কোথায় কোথায় পাচার হয়েছে। তারই উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। যদিও সাবিনা এন্টারপ্রাইজ দুবাই কনাসইনমেন্টে টাকা দিত কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে, শেখ শাহজাহান বার বারই দাবি করেন, ‘সব মিথ্যে কথা।’
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)