গত মার্চে তালিকা প্রকাশের পর থেকেই এই প্যানেলে বেনোজলের প্রবেশের অভিযোগে সরব আইনজীবীদের একটা বড় অংশ। দক্ষদের বিশেষ মামলায় বাদ দেওয়া, তুলনায় কম গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার মতো অভিযোগও রয়েছে। তুলনায় কম দক্ষদের বড় পদে বসিয়ে দেওয়ার অভিযোগে ক্ষোভ রয়েছে শাসকদলেই। কিন্তু তার থেকেও বড় অভিযোগ, ফৌজদারি মামলায় একেবারে আনকোরাদের সরকারি প্যানেলে জায়গা দেওয়া। এ দিন আদালতের প্রশ্নে রাজ্যের পিপি দেবাশিস রায় মেনে নেন, এই প্যানেলে সাত বছরের কম অভিজ্ঞরাও জায়গা পেয়েছেন।
যা শুনে এক আইনজীবী প্যানেলকে ‘কিন্ডারগার্টেন’ বলে মন্তব্য করলে তাতে কার্যত সায় দেয় হাইকোর্ট। বিচারপতি বাগচির বক্তব্য, ‘সরকারের হয়ে অনভিজ্ঞরা মামলা লড়লে বিচারের ক্ষতি হবে। নির্যাতিতরা সঠিক বিচার পাবেন না। এতে মামলার মান কমবে।’ তাই কোনও ভাবেই যাতে সরকারের হয়ে মামলার দায়িত্ব অনভিজ্ঞদের দেওয়া না হয়, তা নিশ্চিত করতে আদালত সরকারি কৌঁসুলিকে অনুরোধ করেছে।
আদালতের প্রস্তাব, সরকারি প্যানেলে কাউকে নেওয়ার আগে নিশ্চিত করে নেওয়া প্রয়োজন যে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী অন্তত ২০-২৫টি মামলায় মক্কেলের হয়ে নিজে সওয়াল করেছেন। সরকারি প্যানেল তৈরির ক্ষেত্রে হাইকোর্ট প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে দক্ষ ও অভিজ্ঞ আইনজীবীদের তালিকা তৈরি করতে হয় লিগ্যাল রিমেমব্রান্সারকে। কিন্তু আদালতের বক্তব্য, কী ভাবে এই সব অনভিজ্ঞ সরকারের হয়ে সওয়াল করার সুযোগ পাচ্ছেন?
আইনজীবীদের একাংশের মতে, শাসকদলের প্রতি আস্থা দেখানো যদি সরকারি প্যানেলে জায়গা পাওয়ার চাবিকাঠি হয়, সে ক্ষেত্রে কাজের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। তাঁদের আরও ব্যাখ্যা, একের পর এক মামলায় হেরে যাওয়ার ফলে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ সরকারি প্যানেলে আর ভরসা রাখছে না। তাই গত ৬ মার্চ স্বরাষ্ট্র দপ্তর বিজ্ঞপ্তি জারি করে।
তার জেরে এখন থেকে পুলিশ নিজেদের মামলা লড়ার জন্য প্যানেলের বাইরে থেকে আইনজীবী নিয়োগ করছে। ফলে সিনিয়র আইনজীবীদের পরামর্শ, হাইকোর্টের এই লাগাতার সতর্কবার্তাকে এখনই গুরুত্ব দেওয়া দরকার।