এই সময়: দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের ভোট আগামী ১ জুন নির্বাচন। কিন্তু তার আগেই দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল কসবা বিধানসভার আনন্দপুর এলাকা। বিজেপির অভিযোগ, শনিবার রাতে প্রার্থীর পোস্টার লাগানোর সময়ে তাদের মহিলা মণ্ডলের সভাপতি সরস্বতী সরকারকে প্রাণে মারার চেষ্টা করেন একদল তৃণমূল কর্মী-সমর্থক। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনীতির পারদ চড়েছে। ঘটনার নিন্দা করে রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে চিঠি দিয়ে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারির দাবি জানিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশন।শনিবার রাতে কসবা এলাকার পূর্বপাড়ায় প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরীর সমর্থনে দেওয়াল লিখছিলেন কয়েক জন বিজেপি-কর্মী। পোস্টারও লাগানো হচ্ছিল। অভিযোগ, সেই সময়ে হঠাৎ হামলা চালায় তৃণমূল কর্মীদের একটি দল। বাধা দিলে সরস্বতী-সহ তিনজন কর্মীকে মারধর করা হয়। চপার দিয়ে সরস্বতীর মাথায় আঘাত করা হয় বলেও অভিযোগ।

রাতেই খবর দেওয়া হয় বিজেপির কলকাতা দক্ষিণ জেলা সভাপতি অনুপম ভট্টাচার্য এবং প্রার্থী দেবশ্রীকে। রবিবার সকালে উত্তর পঞ্চান্নগ্রামে সরস্বতীর বাড়িতে যান দেবশ্রী। অভিযোগ, হামলার ব্যাপারে আনন্দপুর থানায় এফআইআর করতে গেলেও তা নেওয়া হয়নি। এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলার সুশান্ত ঘোষের বক্তব্য, ‘ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। স্থানীয় স্তরে কোনও সমস্যা হয়ে থাকতে পারে।’

আপাতত মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে ঘরেই রয়েছেন সরস্বতী। তাঁর কথায়, ‘আমি পিছন দিকে ছিলাম। দেখলাম, দলীয় কর্মী মনোজ পোদ্দার ও যাদব বৈষ্ণবকে মারধর করা হচ্ছে। বাঁচানোর চেষ্টা করি। আমাকেও রেয়াত করা হলো না। গোপাল মালিক নামে এক ব্যক্তি মারধর করতে শুরু করে। নারায়ণ নামে আর এক ব্যক্তি আমার মাথায় চপার দিয়ে আঘাত করে। ঘটনায় তৃণমূলই যুক্ত।’

অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারির দাবিতে রবিবার সকালে থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। সন্ধ্যায় ফের দফায় দফায় উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। আনন্দপুর থানার সামনে টায়ার জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ। অনুপম ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমাদের প্রার্থী এবং কর্মীরা প্রচারে নেমে যে ভাবে সমর্থন পাচ্ছেন, তাতে তৃণমূল ভয় পেয়ে গিয়েছে। ওদের গড় এ বার নড়ে যাবে।’ সুশান্তর দিকে ইঙ্গিত করে অনুপমের সংযোজন, ‘এলাকার এক প্রভাবশালী নেতা এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন।’

সুশান্ত পাল্টা বলেন, ‘যতদূর জানি, রাতে ভোট-প্রচারের কাজ করা যায় না। ঘটনাটি ঘটেছে রাত ১২টার পর। ওঁরা কেনই বা তখন ফ্ল্যাগ লাগাচ্ছিলেন? যাই হোক…এর সঙ্গে আমাদের দলের যোগ নেই। যিনি বা যাঁরা যুক্ত, আমরাও তাঁদের শাস্তি চাই। পুলিশ-প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।’

দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্রে এ বার ত্রিমুখী লড়াই। গতবারের জয়ী, তৃণমূলের মালা রায়ের বিরুদ্ধে আছেন বিজেপি-র দেবশ্রী এবং সিপিএমের সায়রা শাহ হালিম। দেবশ্রীর কথায়, ‘সন্দেশখালি থেকে কলকাতা — রাজ্যের মহিলাদের নির্যাতন করা হচ্ছে। এটা চলতে পারে না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *