এই সময়: ভোটের দিন সরকারি হোক অথবা বেসরকারি, যে কোনও সংস্থার কর্মীদের সবেতন ছুটি দেওয়াটাই দস্তুর। সকলে যাতে সেই নিয়ম মেনে চলেন সেজন্য কমিশনের তরফে আগেই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও বেশ কয়েকটি নামকরা বহুজাতিক ফুড ডেলিভারি সংস্থা এবং ই-কমার্স কোম্পানি মালপত্র সরবরাহের জন্য ডেলিভারিম্যানদের ভোটের দিন ছুটি দিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।বিষয়টি নিয়ে কমিশনের তরফে সেই সংস্থাগুলিকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। কমিশনের এক আধিকারিকের ব্যাখ্যা, ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী যে লোকসভা কেন্দ্রে ভোট থাকবে সেখানকার সমস্ত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মচারীদের সবেতন ছুটি দিতে বাধ্য। তিনি সেই কর্মী অন্য লোকসভার ভোটার হয়ে থাকেন তাহলেও তাঁকে ভোটের দিন ছুটি দিতে হবে।

সে জন্য কোনও বেতন কাটা যাবে না। এই কারণে যেখানে ভোট থাকে সেখানে পাবলিক হলিডে হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কেউ যদি এই নিয়ম ভাঙে তাহলে ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী ৫০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করতে পারে প্রশাসন। বিষয়টি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে রিপোর্ট পেশ করতে হয়।

কমিশন সূত্রের খবর, গত ১৯ এপ্রিল প্রথম দফার লোকসভা ভোটের দিন তামিলনাড়ুতে একাধিক নামকরা ই-কমার্স সংস্থা ডেলিভারি বয়দের মাল সরবরাহের কাজে নিযুক্ত করেছিল বলে কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়। এরপরেই নড়েচড়ে বসেছে কমিশন।
সিটুর রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহু বলেন, ‘ইলেকশনের দিন সবেতন ছুটি পাওয়া কর্মীদের অধিকার। কারণ, প্রত্যেক নাগরিকের ভোট দেওয়ার অধিকার রয়েছে। আমরা নিশ্চয় বিষয়টি কমিশনকে জানাবো।’

তিনি জানিয়েছেন, ‘ই-কমার্স সংস্থাগুলিতে যারা ডেলিভারিম্যান হিসাবে কাজ করেন তারা অসংগঠিত। কয়েক বছর ধরে তাদেরকে সংগঠিত করার প্রয়াস চালাচ্ছে সিটু। যদিও তাদের সিংহভাগ লোককে এখনও এক ছাতার তলায় আনা যায়নি। অল ইন্ডিয়া জিআইজি ওয়ার্কাস ইউনিয়নের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ডেলিভারিম্যানরা সবাই কমিশনের ভিত্তিতে কাজ করেন। ভোটের দিন কেউ যদি কাজ না করে তাহলে কমিশন পাবে না। সেজন্য বাধ্য হয়ে সবাইকে কাজে আসতে হয়। ডেলিভারিম্যানরা অসংগঠিত হওয়ায় তারা কোনও অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারে না। সংস্থার বিরুদ্ধে কিছু বলতে গেলেই কাজ হারানোর ভয় থাকে।’

এর মধ্যেই একটি বহুজাতিক অনলাইন ফুড ডেলিভারি সংস্থার তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, তীব্র গরমের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের ডেলিভারিম্যানদের দুপুর ১২টা থেকে ৪টে পর্যন্ত কম করে ৩ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট ডেলিভারির কাজ করতে হবে। এ জন্য ইনসেনটিভের পরিমাণ ২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা করা হয়েছে।

এ নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট ফুড ডেলিভারি সংস্থার সিইও-কে প্রতিবাদপত্র পাঠিয়েছে অল ইন্ডিয়া জিআইজি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন। তাতে তারা জানিয়েছে, গরমে কাজ করার ফলে যদি কোনও কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েন তাহলে তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকেই।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version