বাংলায় তাঁর অনেকগুলো মিটিং তাঁর রয়েছে।’ চলতি লোকসভা নির্বাচনে একাধিকবার মমতা বনাম মোদীর বাগযুদ্ধ দেখা গিয়েছে। দুই শিবিরের দুই শীর্ষ নেতা-নেত্রী একে অন্যের দিকে তোপও দেগেছেন। কিন্তু ভোটে শেষ হওয়ার আগেই মোদীকে সরাসরি এই ভাবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চিহ্নিত করেননি মমতা।
কয়েক দিন আগেই উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনী জনসভায় রাহুল গান্ধী মন্তব্য করেছিলেন, ‘আমার কথা লিখে রাখুন, মোদী আর কোনও দিন দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন না।’ ভোট রাজনীতিতে পোড়খাওয়া মমতাও সরাসরি মোদীকে ‘বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী’, ‘প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী’ বলে চিহ্নিত করায় তা যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
যদিও মোদী এ দিন রাজ্যে চারটি সভাতেই আমজনতার সামনে আত্মবিশ্বাসী চেহারা তুলে ধরতে চেয়েছেন। বিজেপি চারশো আসন পাওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে বলেও ফের জানিয়েছেন তিনি। ব্যারাকপুরের সভায় মোদী বলেছেন, ‘প্রথম তিন দফার ভোট হয়ে গিয়েছে। সোমবার চতুর্থ দফার ভোট। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমি বলতে পারি, এনডিএ চারশো আসনের গণ্ডি পার করতে চলছে। কারণ মোদীর উপরেই দেশের ভরসা রয়েছে।’
মোদীর সুরে বিজেপির ছোট-বড় সমস্ত নেতা এখনও ‘চারশো পার’-এর কথা বলে চলেছেন। কিন্তু মমতার পর্যবেক্ষণ বলছে, বিজেপি এবার নিশ্চিত বিদায় নিতে চলেছে। আমডাঙার সভায় মমতা বলেন, ‘সন্দেশ তো আপনার জন্য অপেক্ষা করছে! রেজাল্ট মিলিয়ে নেবেন। হিন্দিতে সন্দেশ মানে খবর। দেশকা খবর কেয়া হ্যায়? মোদী যা রহা হ্যায়। মোদী হার রহা হ্যায়। মোদী বিদায় লে রহা হ্যায়।’
তৃতীয় দফার ভোটের পর থেকেই মমতা রাজ্য ধরে ধরে দেখিয়েছেন, বিজেপির ঝুলিতে এবার দু’শো আসন যাবে কি না সন্দেহ। দক্ষিণ ভারতে গেরুয়া শিবির শূন্য হয়ে যেতে পারে বলেও মনে করছেন তিনি। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, উত্তরপ্রদেশে বিজেপি ২০১৯ সালে যে সংখ্যায় আসন জিতেছিল, এবার তার অর্ধেক পাবে কি না, তা নিয়েও সন্দিহান মমতা।
এই কারণেই মমতা এ দিন বলেন, ‘এটা বুঝতে পারছে না, নিজে প্রচারের ঘণ্টা বাজাতে বাজাতে বিজেপির মৃত্যু ঘণ্টা বেজে গিয়েছে। তিন পর্বের নির্বাচনে প্রথমে এ-পাশ, পরেরটায় ও-পাশ, তারপরে ধপাস হয়েছে। সেই জন্য শেয়ার বাজার পড়েছে। লগ্নিকারীরা সব টাকা তুলে নিয়ে চলে যাচ্ছে।’ মোদীকে মুখ করে বিভিন্ন মাধ্যমে বিপুল প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি। মোদীর ‘বিকশিত ভারত’কেও সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। যদিও মোদীর ভাষণে তাঁর নিজস্ব ভাবনার কতটা প্রতিফলন রয়েছে, তা নিয়ে সন্দিহান মমতা। তাই মোদীকে প্রকাশ্য বিতর্কে যোগ দেওয়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন তৃণমূলনেত্রী।
মমতার কথায়, ‘ক্ষমতা থাকলে একদিন বোসো একটা মঞ্চে। জনতা শ্রোতা থাকবে। তুমি একদিকে থাকবে, আমি একদিকে থাকব। মিডিয়া প্রশ্ন করবে। আমি দেখতে চাই, তুমি কতটুকু জানো। যেটুকু বক্তৃতা দাও, সেটাও তো টেলিপ্রম্পটার দেখে বলো!’