টেরকোটার নিপুণ কারুকার্য ও মন্দিরে মন্দিরে ছয়লাপ গোটা শহর। তাই খ্যাত মন্দিরনগরী হিসেবে। বাংলার শিল্প সংস্কৃতিরও অন্যতম পিঠস্থান এই এলাকা। জঙ্গলমহলের অন্যতম জেলা বাঁকুড়ার দুই লোকসভা কেন্দ্রের একটি এই বিষ্ণপুর। আগামী ২৫ মে ষষ্ঠ দফার নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হতে চলেছে এই বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে। হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি, তাই প্রচার ময়দানে একে অপরকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে রাজি নয় কোনও পক্ষ।

লড়াইতে কারা?

এই বছর প্রথম থেকেই বিশেষভাবে নজরে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্র। কারণ একদিকে বিষ্ণুপুরে যেমন লড়াইতে রয়েছেন ওই কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। অন্যদিকে তেমনই সোমিত্রর বিপক্ষে লড়ছেন তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল। এক্ষেত্রে একটা বিষয় উল্লখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনে সৌমিত্র হয়ে প্রচারকার্যের প্রধান দায়িত্ব সামলেছিলেন সুজাতা। পরবর্তীতে তিনি যোগ দেন তৃণমূলে। প্রচারের ময়দানে একে অপরকে রীতিমতো নিশানা করছেন তাঁরা। এছাড়াও লড়াইতে রয়েছেন সিপিএম প্রার্থী শীতল কৈবর্ত্য। সিপিএম প্রার্থীকে আবার সমর্থন দিচ্ছে কংগ্রেস।

বিগত ভোটগুলির পরিসংখ্যান

প্রসঙ্গত, বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রটি তপশিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত। বাঁকুড়া জেলার ওন্দা, বড়জোড়া, বিষ্ণুপুর, কোতুলপুর (তফসিলি জাতি), সোনামুখি (তফসিলি জাতি), ইন্দাস (তফসিলি জাতি) ও পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ (তফসিলি জাতি) বিধানসভা নিয়ে গঠিত এই লোকসভা কেন্দ্রটি। গত লোকসভা নির্বাচনে ৬ লাখ ৫৭ হাজার ১৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন সৌমিত্র। যদিও ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে অবশ্য অনেকটাই পরিবর্তন দেখা যায়। বর্তমান বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বড়জোড়া, বিষ্ণুপুর, কোতুলপুর ও খণ্ডঘোষ রয়েছেন তৃণমূলের দখলে। আর বাকি ৩ টি বিধানসভা নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছে বিজেপি।

ভোটের ইস্যু

স্থানীয়দের একটা অংশের অভিযোগ, বিষ্ণুপুরের দ্বারিকা ও বড়জোড়াতে বিভিন্ন কলকারখানা গড়ে উঠলেও বর্তমানে অনেকগুলিই বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। তার ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন বহু মানুষ। সেক্ষেত্রে কৃষি ও পর্যটন শিল্পের উপর ভর করে এগিয়ে চলছে বিষ্ণুপুর লোকসভা। শীতকাল ছাড়াও, বছরের বিভিন্ন সময় পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে বিষ্ণুপুরে।

কেমন চলছে প্রচার?

আগামী ২৫ তারিখ ভোট। তাই হাতে আর যেটুকু সময় রয়েছে তাতে প্রচারকার্যে কোনওভাবেই পিছিয়ে থাকতে চাইছেন না কেউই। এই বিষয়ে বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি অমরনাথ শাখা বলেন, ‘মোদী গ্যারান্টি মানুষের মধ্যে। মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে।’ অমরবাথ জানান, তাঁদের প্রচারের মূল ইস্যুই ছিল রাজ্য সরকারে বঞ্চনা। জনমুখী কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি রাজ্যে বাস্তবায়িত করতে না দেওয়া। তাই দলীয় প্রার্থীর জয়ের বিষয়ে ১০০ শতাংশ আশাবাদী তিনি।

এদিকে তৃণমুলের তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান আলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের সম্মান, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দিচ্ছেন। অনান্য রাজনৈতিক দলগুলি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। বিজেপির সাংসদকে সাতটি বিধানসভায় দেখা যায়নি। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গিয়েছে। তাই বাঁকুড়া জেলার দু’টো আসনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দেবে সাধারন মানুষ।’ সেক্ষেত্রে দাবি-পালটা দাবির মাঝে বিষ্ণুপুরবাসীর আশীর্বাদ কার সঙ্গে থাকে, তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version